কাবুল ছাড়ছেন আমেরিকার শেষ সেনা জওয়ান। ছবি—রয়টার্স।
দু’দশকের যুদ্ধের অবসান ঘটল। আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করে নিল আমেরিকা। সোমবারই আফগানিস্তান থেকে উড়েছে আমেরিকার শেষ বিমান। প্রায় ২০ বছর আগে যে তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়েছিল আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী, তারা চলে যেতেই আফগানিস্তানকে ‘পুরোপুরি স্বাধীন’ ঘোষণা করল তালিবান।
সেনার শেষ দল আফগানিস্তান ছাড়ার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘‘২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে আমাদের সেনা মোতায়েন ছিল। আমরা সব সেনা প্রত্যাহার করলাম।’’ তালিবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া আফগানিস্তান থেকে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য সেনা জওয়ানদের প্রশংসাও করেছেন বাইডেন। যাঁরা আফগানিস্তান ছাড়তে চান, তাঁদের নিরাপদে যেতে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি তালিবান দিয়েছিল, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন বাইডেন। মঙ্গলবার বিকালে আমেরিকাবাসীর উদ্দেশে এ নিয়ে তিনি ভাষণও দিতে পারেন।
আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার নিয়ে পেন্টাগনের কর্তা জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, শেষ বিমান সি-১৭ রওনা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘১০০ শতাংশ নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমেরিকার সব কর্মী এখন আফগানিস্তানের বাইরে।’’ কূটনীতিবিদ এবং আমেরিকার নাগরিক-সহ প্রায় ৬ হাজার জনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। আমেরিকার সেনা দেশ ছাড়ায় খুশি তালিবানও। তালিবান মুখপাত্র কোয়ারি ইউসুফ সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা-কে বলেছেন, ‘‘আমেরিকার শেষ সেনা কাবুল বিমানবন্দর ছেড়েছে। আমাদের দেশ এখন পুরোপুরি স্বাধীন।’’
তালিবানের সঙ্গে চুক্তির পরই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরাতে শুরু করে আমেরিকা। তার পর থেকে প্রায় বিনা বাধায় আফগানিস্তানের একের পর এক প্রদেশ দখল করে তালিবান। তারা কাবুল দখল করতেই দেশ ছেড়ে পালান প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। প্রায় বিনা বাধায় ক্ষমতা হস্তান্তর হয়। তালিবান কাবুল দখল করতেই দেশ ছেড়ে পালানোর হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আমেরিকা, ব্রিটেন, ভারত-সহ বহু দেশ তাদের নাগরিক এবং দূতাবাসের কর্মীদের উদ্ধারকাজ শুরু করে। তালিবান এর পরই জানিয়ে দেয়, ৩১ অগস্টের মধ্যে উদ্ধারকাজ শেষ করতে হবে। চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় আমেরিকাকে। মঙ্গলবার সেই সময়সীমা শেষ হল। আমেরিকা পুরোপুরি সেনা তুলে নিয়ে আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ল।