প্রতীকী ছবি।
করোনা টিকার সমবণ্টন নিয়ে গোড়া থেকেই জোর দিয়ে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নয়া উদাহরণ তৈরি করা হোক। যদিও বাজারে কোভিড প্রতিষেধক আসার প্রায় এক বছর পরেও ‘একতার’ ঝুলি ফাঁকা।
গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুষ্ঠানে বাইডেন সমস্ত দেশকে করোনা প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানান। তিনি বলেন, ‘‘বিজ্ঞান ও রাজনীতি, দুই ক্ষেত্রেই আমাদের সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব টিকাকরণ চাই। সেই সঙ্গে অক্সিজেন, করোনা টেস্ট, চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও মজবুত করা প্রয়োজন।’’ আজ হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ২০২২ সালে অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডোজ় তারা বিভিন্ন দেশকে পাঠাবে।
কিন্তু আমেরিকার এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নয় দরিদ্র দেশগুলি। তাদের বক্তব্য, আমেরিকার মতো ধনী দেশগুলোয় ঝড়ের গতিতে টিকা দেওয়া চলছে। আর গরিব দেশগুলোর স্যালাইন চলার মতো অবস্থা। তাদের প্রশ্ন, এমন বৈপরীত্য কেন?
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে ফিলিপিন্স। মাত্র ১৭ শতাংশ বাসিন্দার টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ দেশের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতের্তে-র অভিযোগ, ধনী দেশগুলোয় রমরমিয়ে চলছে টিকা দেওয়া। আর গরিব দেশগুলো টিকার অপেক্ষায়। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু উন্নয়নশীল দেশে বাসিন্দাদের টিকাকরণে আওতায় আনতে সরকার একটি ডোজ় দিয়ে রাখছে। দুতের্তে তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘আমি স্তম্ভিত— নিন্দনীয় পরিস্থিতি। এই ধরনের স্বার্থপরতা কোনও যুক্তিতে, কোনও নীতিতে মেনে নেওয়া যায় না।’’
এ পর্যন্ত বিশ্বে ৬০০ কোটি ডোজ় টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কম আয়ের দেশগুলি পেয়েছে মাত্র ২ শতাংশ ডোজ়। এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু দেশের কূটনীতিকরাও টিকা পাননি। এক দিকে যখন টিকার জন্য হাহাকার, বেশ কয়েকটি ধনী দেশে তৃতীয় ডোজ় দেওয়া শুরু হয়েছে। এ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। আমেরিকার ‘সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-র উপদেষ্টা কমিটি আজ-কাল দু’দিন বৈঠকে বসবে। আলোচনার বিষয়বস্তু বুস্টার ডোজ়। সম্প্রতি ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-কে আমেরিকান টিকা উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ফাইজ়ারের বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ় দেওয়া শুরু করতে। যাঁরা অন্য কোনও অসুস্থতার জন্য ঝুঁকির তালিকায় আছেন, তাঁদেরও বুস্টার শট দিতে বলা হয়েছে। এই ক্যাটেগরির প্রায় সকলেরই দু’টি ডোজ় নেওয়ার ছ’মাস হয়ে গিয়েছে।