আফগানিস্তান নিয়ে আবার রীতিমতো চাপে পড়ে গেল আমেরিকা।
কুন্দুজের হাসপাতালে মার্কিন বিমান-হানাদারির ঘটনাকে রাষ্ট্রপুঞ্জ তীব্র নিন্দা করায়, আমেরিকা শেষমেশ ভুল স্বীকার করে নিল।
মার্কিন সেনাবাহিনীর তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের বাহিনীর পক্ষে যারা বিপজ্জনক, সেই তালিবানরাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। তবে, বিমান-হানাদারির সময় ভুলবশত, কাছের হাসপাতালটিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’’ তবে লক্ষ্যণীয়, মার্কিন সেনাবাহিনীর তরফে এই ‘ভুল-স্বীকারে’র ঘটনাটি ঘটেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বানকি-মুন ওই আফগান হাসপাতালে মার্কিন বিমান-হানার তীব্র নিন্দা করার পর। কুন্দুজে মার্কিন বিমানের হানাদারিতে ওই হাসপাতালের সাত রোগী-সহ মোট ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে তিনটি শিশুও। গুরুতর জখম হয়েছেন ৩৭ জন। গত কাল ওই ঘটনার পরেই ‘বন্ধু’ আমেরিকা বড় ধরনের কূটনৈতিক অস্বস্তিতে পড়তে পারে, এটা আঁচ করেই আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির দফতর একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘‘আফগানিস্তানের মার্কিন কম্যান্ডার জন এফ ক্যাম্পবেল ক্ষমা চেয়েছেন।’’ কিন্তু, তখনও নিজেদের বিবৃতিতে ওই ঘটনার দায় স্বীকারের পথে হাঁটেনি আমেরিকা। মার্কিন বাহিনীর ‘স্বীকারোক্তি’ এল রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রশ কমিটির তীব্র নিন্দার পর। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি-মুন ওই ঘটনার ‘নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত’ চেয়েছেন।
আফগানিস্তানে তালিবান শাসনের অবসানের প্রায় দু’দশক পর এই প্রথম কুন্দুজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে জঙ্গিরা। কুন্দুজকে তাদের দখল-মুক্ত করতে গত কয়েক দিন ধরেই জোর লড়াই চালাচ্ছে আফগান সেনাবাহিনী। তাদের সাহায্য করতে কাল জোর হানাদারি চালায় মার্কিন বিমানবাহিনীও।
আন্তর্জাতিক আইনের পরোয়া না-করে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ডক্টর্স উইদাউট বর্ডারস’-এর হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও, ওই এলাকায় কাল আধ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বিমান-হানা চালায় আমেরিকা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাতরাতে থাকেন রোগী ও হাসপাতাল কর্মীরা। ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসা এক নার্স জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন তিন চিকিৎসক, এক চিকিৎসা-কর্মী ও দুই নিরাপত্তারক্ষী।