সাময়িক ভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেনের সঙ্গে সঙ্ঘাতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি। ঘোষণা করা হল রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। শনিবার মস্কোর স্থানীয় সময় বেলা ১০টা (ভারতীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টা)-য় এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার জন্য ঘোষণা করা হল এই যুদ্ধবিরতি। সংবাদ সংস্থা এএফপি-র তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে যে, আজভ সাগরের তীরের বন্দর শহর মারিউপোলের বাসিন্দাদের দেশ ছাড়ার সুযোগ দিয়ে সাময়িক ভাবে এই ঘোষণা করল রাশিয়া।
মারিউপোলের পাশাপাশি ভলনোভাখা শহরেও জারি হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি। কিভ-মস্কো সঙ্ঘাতের দশম দিনে এসে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল মস্কো সরকার। চলতি সপ্তাহে বেলারুশে দ্বিতীয় দফার শান্তি বৈঠকের পরে রাজধানী কিভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের অসামরিক বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে ঐকমত্য হয়েছিল। তারই ভিত্তিতে মস্কোর এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণের শহর খারসেনের দখল নিলেও রুশ বাহিনী এখনও আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ওডেসা ও মারিউপোলকে দখল করতে পারেনি। ওই দু’ই শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানহানায় বেশ কয়েকজন অসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবরও মিলেছে।
দশম দিনেও পর্যন্ত উত্তেজনা প্রশমনের নামগন্ধ ছিল না। বরং ইউক্রেনের একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গাকে কব্জা করতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হানা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনে অবস্থিত ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্র আক্রমণ করার পর পুতিন-সেনার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর মারিউপোল।
শনিবার মারিউপোলের মেয়র জানিয়েছিলেন, দিন কয়েক ধরে প্রবল আক্রমণ হচ্ছে বন্দরে। ইউক্রেন সেনাও প্রতিরোধ করছে। এর আগে ইউক্রেনের রাজধানী শহর কিভের একাংশ এবং খেরসনের কিছু জায়গায় নিজেদের ঘাঁটি গেড়ে ফেলেছে রাশিয়া। পাশাপাশি রাশিয়া যুদ্ধের কৌশল আরও বদলাচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছিল।
শনিবারই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদেমির জেলেনস্কি আমেরিকার সেনেটরদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করবেন বলে খবর। সেখানে ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি আমেরিকাকে জানাবেন। তার আগেই এল পাঁচ ঘণ্টার সাময়িক যুদ্ধবিরতির এই খবর।
এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করার আর্জিও জানিয়েছিলেন ইউক্রনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। বেলারুশ সীমান্তে দ্বিতীয় দফার শান্তি বৈঠকের মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার বসতে চেয়েছিলেন জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধ বন্ধ করার এক মাত্র পথ, আমার সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখোমুখি আলোচনা।’’ তবে জেলেনস্কির ওই প্রস্তাবের বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি ক্রেমলিন।