ছবি —এএফপি।
বছর খানেক আগে তালিবদের অভ্যুত্থানে ভিটে-মাটি ছেড়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতে হয়েছিল অগুন্তি আফগানকে। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি আফগানিস্তান ছেড়ে ইউক্রেনে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা। কারণ আগ্রাসন এবং দুই দেশের সঙ্ঘাত। মস্কোর কিভ দখলের ইচ্ছায় আবার অনিশ্চয়তার পথে একাধিক আফগান পরিবার।
একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে তালিব-আফগানিস্তানের সঙ্ঘাতের সময় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘরছাড়া হন আজমল রহমানি। আফগানিস্তান ছেড়ে তিনি থাকতে শুরু করেন ইউক্রেনের ওডেসায়। কিন্তু চার দিন আগে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আবারও ঘর ছাড়তে বাধ্য হন আজমল। শান্তির খোঁজে তাঁর এ বারের গন্তব্য পোল্যান্ড। সংবাদ সংস্থা এফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আজমল বলেন, ‘‘আমি যুদ্ধ থেকে বাঁচতে এক দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। আমাকে আশ্রয়ের খোঁজে আবারও পালাতে হচ্ছে। আমার জন্য এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’
আজমল আরও জানান যে, আফগানিস্তান ছাড়ার আগে তিনি ওই দেশে নেটো-র হয়ে কাজ করতেন। সেই দেশে তাঁর কাছে মোটা মাইনে, নিজের বাড়ি-গাড়ি নিয়ে স্বচ্ছল অবস্থা ছিল। কিন্তু বারবার হুমকির মুখে পড়ে নিজের যাবতীয় সম্পত্তি বিক্রি করে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। তবে, ‘‘আমার কাছে আমার পরিবারের থেকে দামি আর কিছুই নয়’’, চোখের কোণে জল নিয়ে বললেন আজমল।
পোল্যান্ড পৌঁছনোর আগে, নিজের স্ত্রী মিনা, মেয়ে মারওয়া, ছেলে ওমরকে নিয়ে শেষ ৩০ কিলোমিটার পথ আজমলকে পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে হয়েছে। ইউক্রেন সীমান্ত অতিক্রম করে পোলান্ডের মেডিকায় পৌঁছে অন্যান্য শরণার্থীদের সঙ্গে বাস ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন আজমলরা। সেই বাস তাঁদের নিয়ে যাবে নিকটবর্তী প্রজেমিসল শহরে। সেখান থেকেই শুরু হবে তাঁদের নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াই।
প্রাণ বাঁচাতে আজমলদের সঙ্গে ইউক্রেন ছেড়েছেন তাঁর মতো অসংখ্য শরণার্থী, প্রবাসী এবং পড়ুয়ারা। মূলত পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি- এই তিন দেশেই আশ্রয় নিয়েছেন ইউক্রেনত্যাগী আফগানিস্তান, ভারত, নেপাল, কঙ্গোর মতো দেশের মানুষ।