সৌজন্য: চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। বৃহস্পতিবার বেজিংয়ে। রয়টার্স
তিন দিনের সফরে বুধবার চিনে পা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে বেজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করাই এই সফরের লক্ষ্য। চিনের সঙ্গে ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চায়। এই চুক্তির মাধ্যমে চিনের বিরাট মধ্যবিত্ত বাজারটিকে ধরতে আগ্রহী ব্রিটেন।
ব্রেক্সিটই চিন এবং ব্রিটেনকে কাছাকাছি এনেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে। তার পরে নিজেদের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ব্রিটেন। তাই নিজেদের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে এই চিন সফরকে মে ‘পাখির চোখ’ করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই চিন সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পর্ককে সব সময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’’
দেশের ৫০ জন শীর্ষ ব্যবসায়ীকে নিয়ে ‘ঐতিহাসিক’ চিন সফরে গিয়েছেন মে। শিল্পশহর উহান ঘুরে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পৌঁছন বেজিংয়ে। বৈঠক করেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে। তার পরে দু’জনে যৌথ সাংবাদিক করেন। মে বলেন, ‘‘ব্রিটেন এবং চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এটি ‘সোনালি সময়।’ এই সম্পর্ককে আমরা ভবিষ্যতেও এগিয়ে নিয়ে যাব।’’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ আমি পছন্দ করি। এই ভাবেই আমরা শিক্ষা এবং সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’’
বুধবার চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে খ্যছিয়াং জানিয়েছেন, কৃষি পণ্য, আর্থিক পরিষেবা-সহ ব্রিটেনের জন্য বাজার উন্মুক্ত করে দেবে চিন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এখন ব্রেক্সিট সংক্রান্ত আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ব্যাপারে একটি গোপন সরকারি রিপোর্টও সম্প্রতি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিটের পরে কঠিন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে ব্রিটেন। এই অবস্থায় মে চিন সফর ব্রিটেনের অর্থনীতিতে কোনও দিশা দেখাতে পারে কি না, সেটাই দেখার।
ব্রেক্সিট নিয়ে যথেষ্ট চাপের মুখে থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামনে যথেষ্ট কড়া অবস্থানই নিচ্ছেন মে। আজকেই তিনি বলেন, ‘‘এখন ব্রিটেনে ইউরোপীয় ইয়নিয়নের যে সব নাগরিক রয়েছেন, তাঁদের বসবাসের সুযোগ করে দেবে লন্ডন। কিন্তু ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ইইউ-এর নাগরিকরা ব্রিটেন থেকে আর এ ধরনের কোনও সুবিধে পাবেন না।’’