মার্কিন মুলুকে গিয়েছিলেন চিকিত্সা করাতে। কিন্তু, পোশাক ভ্রমে যে পুলিশের হাতকড়া পরতে হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবেননি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ব্যবসায়ী আহমেদ আল মেনহালি!
ঘটনাটি ঠিক কী হয়েছিল?
চিকিত্সা করাবেন বলে আমেরিকার ক্লিভল্যান্ডে গিয়েছিলেন আমিরশাহির ওই ব্যবসায়ী। থাকার জন্য ওহায়োর অ্যাভনে একটি হোটেলে ঢোকেন। রিসেপশনে পৌঁছনোর আগেই হঠাত্ পুলিশ এসে তাঁর কাঁধে বন্দুক ঠেকিয়ে হাতকড়া পরায়। কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না মেনহালি। তিনি তো কোনও অপরাধ করেননি! তা হলে পুলিশ কেন তাঁকে হাতকড়া পরালো? পরে অবশ্য তিনি কারণটি জানতে পেরে প্রচণ্ড রেগে যান।
কেন তাঁকে এ রকম করা হয়েছিল?
সাধারণত আরব দেশের লোকেরা আলখাল্লা জাতীয় যে ট্র্যাডিশনাল পোশাক পরেন, সেটাই বড় ভ্রমের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি যখন ওই পোশাকে হোটেলে ঢুকছিলেন, এক মহিলা তাঁকে দেখতে পান। মেনহালি তখন আরবি ভাষায় ফোনে কথা বলছিলেন। ওই মহিলা ভাবেন, হয়তো কোনও জঙ্গি হোটেল ঢুকে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আত্মীয়াকে ফোন করে বিষয়টা জানান। ফোন যায় পুলিশের কাছেও। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ওসে মেনহালিকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। এমনকী, হোটেলের এক কর্মীও মেনহালিকে আইএস জঙ্গি হিসেবে সন্দেহ করেন। পরে যখন বিষয়টি স্পষ্ট হয়, অ্যাভনের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেনহালির কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। মেনহালি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “পুলিশ তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছে ঠিকই, কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। যাঁরা আমাকে জঙ্গি ভেবে পুলিশকে ফোন করেছিলেন তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে।”
কেন এ রকম করা হল প্রশ্ন ওঠায় অ্যাভন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যে ভাবে আমেরিকায় হোটেল এবং জনবহুল জায়গাগুলিকে বেছে বেছে হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা, তাতে নাগরিকদের মনে একটা ভয় ঢুকে গিয়েছে। সম্প্রতি আইএস জঙ্গিরা একের পর এক হামলা করে রক্তপাত ঘটিয়েছে হয়েছে অরল্যান্ডো, সান বার্নাদিনো, ক্যালিফোর্নিয়ায়।
ঢাকার গুলশনে হোলি আর্টিসান রেস্তোরাঁ যে দিন হামলা চালাল জঙ্গিরা, তার ঠিক পরের দিনই এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। তাদের দেশের নাগরিককে এমন অপদস্থ হতে দেখে আমিরশাহির বিদেশ মন্ত্রক থেকে অ্যাভন প্রশাসনকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। পাশাপাশি, সে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে সতর্ক করা হয় পশ্চিমের দেশগুলিতে গেলে তারা যেন তাদের ‘জাতীয় পোশাক’ না পরেন।