ব্রেট ক্যাভানা
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে ব্রেট ক্যাভানারকে মনোনয়ন করল সেনেটের বিচারবিভাগীয় কমিটি। যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের পছন্দসই প্রার্থী ক্যাভানা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদে বসতে চলেছেন কি না, তাই নিয়েই ভোটাভুটি হয় এই কমিটিতে।
গত কাল ক্যাভানার বিরুদ্ধে সেনেটের বিচারবিভাগীয় কমিটির সামনে মুখ খুলেছিলেন অভিযোগকারিণী ক্যালিফর্নিয়ার অধ্যাপক ক্রিস্টিন ব্লেসি ফোর্ড। তিনি বিশদে জানিয়েছিলেন, কী ভাবে কিশোর বয়সে তাঁর উপরে চড়াও হয়েছিলেন ব্রেট। যৌন নিগ্রহের প্রতিটি মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন তিনি। ঐতিহাসিক ওই শুনানি টিভি-তে দেখেছে গোটা দেশ। সমর্থনের পাল্লা ভারী ছিল ক্রিস্টিনের দিকেই। ডেমোক্র্যাটরাও তাঁর পক্ষে।
ক্রিস্টিনের পরে সেনেটের বিচারবিভাগীয় কমিশনের সামনে ক্যাভানা সাক্ষ্য দেন। আবেগপ্রবণ হয়ে তিনি স্বপক্ষে যুক্তি দেন সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে। বলে চলেন, ক্রিস্টিন কোনও ভাবে যৌন নিগ্রহের শিকার হতেই পারেন। কিন্তু সেই ঘটনার দায় তাঁর নয়। ক্যাভানা এ ব্যাপারে আক্রমণ করেন ডেমোক্র্যাটদেরও। তাঁর দাবি, বিচারপতি পদে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করতে উঠেপড়ে লেগেছেন ডেমোক্র্যাটরা। সেই জন্যই ডেমোক্র্যাটরা ক্রিস্টিনের পাশেও দাঁড়িয়েছেন। ক্যাভানার মন্তব্য, ‘‘আমার সুনাম, আমার পরিবারের সম্মান— সব কিছু ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে এই অভিযোগ। অনেক দিনের পরিশ্রম এবং মার্কিন সরকারের উচ্চ স্তরে কাজ করে তবেই এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে যা চলেছে, তা সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রকল্প। এর সঙ্গে মিশেছে ২০১৬-র নির্বাচন আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি ক্ষোভও।’’
ক্রিস্টিন ছাড়াও ডেবোরা রামিরেজ় এবং জুলি সোয়েটনিক নামে দুই মহিলা অভিযোগ এনেছেন ক্যাভানার বিরুদ্ধে। সে ব্যাপারেও ক্যাভানার প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘গোটাটাই তামাশা। ও সব নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।’’
সাক্ষ্যগ্রহণ-পর্ব শেষ হওয়ার পরেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ক্যাভানার প্রতি তাঁর সমর্থন আগের মতোই অটুট রয়েছে। ট্রাম্প টুইটারে লিখেছেন, ‘‘গোটা আমেরিকাকে ক্যাভানা দেখিয়ে দিয়েছেন, কেন তাঁকে আমি মনোনীত করেছি। ওঁর সাক্ষ্য ছিল সৎ, শক্তিশালী।’’
সেনেটের বিচারবিভাগীয় কমিটিতে ১১ জন রিপাবলিকান সদস্য এবং ১০ জন ডেমোক্র্যাট সদস্য রয়েছেন। শুক্রবার কমিটির মনোনয়নের পরে এ বার মনোনয়ন যাবে সেনেটে। সেখানে ৫১ জন রিপাবলিকান এবং ৪৯ জন ডেমোক্র্যাট সদস্যের মধ্যে আবার এই মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক হবে শনিবার। ক্যাভানা বিচারপতি পদে বসবেন কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে হতে আগামী সপ্তাহ হয়ে যাবে।