শার্লক হোমস চরিত্রে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। ছবি:সংগৃহীত
বই বা সেলুলয়েডের গোয়েন্দা চরিত্রদের মধ্যে শার্লক হোমস সর্বকালের সেরা। ক্ষুরধার বুদ্ধি, অসম্ভব অন্তর্দৃষ্টি শার্লককে ভক্তগণের মাঝে গোয়েন্দার থেকেও বেশি নায়ক করে রেখেছে। কিন্তু প্রায় সব গোয়েন্দা চরিত্রগুলির মতো শার্লকও কি কোনান ডয়েলের শুধুমাত্র ভাবনার ফসল? শার্লক হোমসের আগমন বাস্তব থেকেই। লেখক আর্থার কোনান ডয়েলের মাথায় ছিলেন তাঁরই কলেজের প্রফেসর।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে জোসেফ বেল নামক এক প্রফেসরের ক্লাস, কোনান ডয়েলের বড় প্রিয় ছিল। প্রফেসর ছাড়াও জোসেফ ছিলেন একজন চিকিত্সক। ১৮৭৭-৭৮ সালে লেখক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। পরবর্তীকালে কোনান জানান, বড়ই চিত্তাকর্ষক ছিল প্রফেসরের এক একটা ক্লাস।
আরও পড়ুন- খুন, ধর্ষণ থেকে যে কোনও অপরাধ করা যাবে এই লাইভ শো-এ!
নিজের বিশেষ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা দিয়ে যাচাই করতে বেল ছিলেন শ্রেষ্ঠ। কোনও মানুষকে দূর থেকে একবার দেখেই লোকটির আপাদমস্তক বিচার করতে পারতেন এই প্রফেসর। কোনও মানুষের অঙ্গবিন্যাস, উপস্থিতি, এক নিমেষে তাঁর স্বভাব ইত্যাদি দেখে সহজেই তিনি ব্যক্তির খুঁটিনাটি সম্বন্ধে ধারণা করতে পারতেন। ছাত্র এবং তাঁর রোগীদের কাছে তাঁর এই বিচক্ষণ ক্ষমতা ছিল ম্যাজিকের মতো।
ডঃ জোসেফ বেল। ছবি:সংগৃহীত
ছাত্রদের তিনি বলতেন, প্রখর পর্যবেক্ষণ যে কোনও রোগ নির্ধারণে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে। তারপর আর্থার কোনান ডোয়েলের কাছে আসে প্রিয় প্রফেসরের সহকারী হওয়ার সুযোগ। বহু বছর এই প্রফেসরের সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ পান কোনান ডয়েল। এর মাঝেই তাঁর মাথা থেকে বেরিয়ে পড়ে শার্লক হোমস। শার্লক হোমসের সবকিছুই ছিল ডয়েলের মস্তিস্ক প্রসূত। কিন্তু কেস সমাধান করার কিছু কিছু সূত্র তাঁকে দিয়ে দিতেন গুরু জোসেফ বেল। একদা আর্থার হোমস নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে, 'এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের এক প্রফেসরকে কল্পনা করে আমার শার্লক হোমস লেখা।'
ডয়েল একবার জোসেফ বেলকে লিখেছিলেন, “আপনার জন্যই আমি শার্লক হোমস চরিত্রের সৃষ্টি করতে পেরেছি।” প্রত্যুত্তরে বেল বলেছিলেন, “তুমি নিজেই শার্লক হোমস, আর সে কথা তোমার থেকে ভাল আর কেউ জানে না।”