মূল্যবান রত্ন, সোনা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসে ঠাসা বাক্স। লুকিয়ে রাখা ছিল রকি পাহাড়ের জঙ্গলে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। আমেরিকার নিউ মেক্সিকো প্রদেশের রাজধানী সান্তা ফে শহরে।
দিন কয়েক আগে গুপ্তধনের হদিশ পেয়েছেন এক ব্যক্তি। যদিও তিনি নিজের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করতে ইচ্ছুক নন। তিনি গুপ্তধন উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন অশীতিপর লেখক এবং শিল্প সংগ্রাহক ফরেস্ট ফেনকে। সংবাদমাধ্যমে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন ফেন।
ফরেস্ট ফেন একটি বই লিখেছিলেন। সেখানেই বলা ছিল গুপ্তধনের কথা। সঙ্গে দেওয়া ছিল সঙ্কেত। মুখে মুখে তাঁর সম্পদের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘দ্য ফেন ট্রেজার’। রকি পাহাড়ের ঘন জঙ্গলে এই সম্পদ নিজেই লুকিয়ে রেখেছিলেন ফেন।
প্রায় ১০ বছর আগে লুকিয়ে রাখা সম্পদ এত দিনে উদ্ধার হল। ফেন অপেক্ষায় ছিলেন, কে তাঁর দেওয়া সঙ্কেতের রহস্য উদ্ধার করতে পারেন, তা দেখার জন্য। এত দিনে তাঁর অপেক্ষার অবসান হল। (ছবি: শাটারস্টক)
কিন্তু গুপ্তধন উদ্ধারকারীর নাম বা পরিচয় ফেন জানেন না। জানতে চানও না। নিজের ওয়েবসাইটে তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধারের পরে তাঁকে ছবি তুলে পাঠিয়েছেন সেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। ছবি দেখে তিনি নিশ্চিত এই সম্পদ তাঁরই লুকিয়ে রাখা।
তাঁর বইয়ে একটি কবিতার মাধ্যমে বলা ছিল কোথায় আছে গুপ্তধন। ফেন জানিয়েছেন, ১০ বছর ধরে সেই একই জায়গায় ছিল সম্পদভর্তি বাক্স। তারাভরা আকাশের নীচে ঘন জঙ্গলের মাটি খুঁড়ে তার সন্ধান মিলেছে। (ছবি: শাটারস্টক)
কিন্তু সঙ্কেতের রহস্য এখনও স্পষ্ট করতে চান না তিনি। তা লুকিয়ে রয়েছে সেই ২৪ লাইনের কবিতার মধ্যেই। যা রয়েছে ২০১০-এ প্রকাশিত তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য থ্রিল অব চেজ’-এ।
ফেনের লুকিয়ে রাখা বাক্সের জন্য গত এক দশকে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন কয়েক হাজার গুপ্তধন সন্ধানী। তাঁদের মধ্যে অনেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন এই নেশায়। অনেকে খুইয়েছেন সর্বস্ব। এমনকি, প্রাণও হারিয়েছেন চার জন। (ছবি: শাটারস্টক)
ফেন জানিয়েছেন, তাঁর বাক্সে ছিল কয়েকশো দুষ্প্রাপ্য স্বর্ণমুদ্রা, চুনী আর পান্না বসানো জেড পাথরের গয়না। পাশাপাশি আরও মূল্যবান জিনিস। গল্পের বইয়ের পাতায় পড়া অভিযানের দিকে মানুষকে আকৃষ্ট করতেই তাঁর এই উদ্যোগ, জানিয়েছেন তিনি। (ছবি: শাটারস্টক)
৯ কেজি ওজনের বাক্সে রাখা ছিল ১০ কেজি ওজনের গুপ্তধন। ফেনের দাবি, দুর্ভেদ্য বন পেরিয়ে তিনি নিজে গিয়ে ওই বাক্স রেখে এসেছিলেন। (ছবি: শাটারস্টক)
এখন কেমন লাগছে তাঁর? এক দশকের রোমাঞ্চ শেষে ফেনের এখন মিশ্র অনুভূতি। এক দিকে ভাল লাগছে, অবশেষে কেউ তাঁর উদ্দেশ্য সফল করে সঙ্কেতের পাঠোদ্ধার করতে পেরেছেন। আবার অন্য দিকে গুপ্তধনকে ধাওয়া করে ছুটে যাওয়ার একটি পর্ব শেষ হল বলে তাঁর মন খারাপ।
তবে তাঁর আশা, অভিযানের নেশা মানুষের মনে রয়েই যাবে। সেই নেশাই মুক্তি দেবে শহুরে যান্ত্রিকতা থেকে। তাঁর দেওয়া সঙ্কেতের পিছনে ছুটে যাওয়া প্রত্যেক অভিযাত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন চিরসবুজ এই অশীতিপর। (ছবি: শাটারস্টক)