এফবিআই-এ ভরসা রাখুক দেশ: কোমি

টিভি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’-এ সঞ্চালকের প্রিয় লাইন ছিল— ‘‘ইউ আর ফায়ার্‌ড! আপনাকে বরখাস্ত করা হলো।’’ দিন পাল্টেছে। বদলায়নি সেই সঞ্চালকের ভাবভঙ্গি। পাল্টায়নি তাঁর ‘কর্মীদের’ ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার প্রবণতাও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০৪:২১
Share:

টিভি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’-এ সঞ্চালকের প্রিয় লাইন ছিল— ‘‘ইউ আর ফায়ার্‌ড! আপনাকে বরখাস্ত করা হলো।’’

Advertisement

দিন পাল্টেছে। বদলায়নি সেই সঞ্চালকের ভাবভঙ্গি। পাল্টায়নি তাঁর ‘কর্মীদের’ ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার প্রবণতাও। এমনকী, হোয়াইট হাউসের মসনদ দখল করার পরেও। এফবিআই প্রধান জেমস কোমিকে বরখাস্ত করার পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে এ ধরনেরই কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে ওয়াশিংটনে।

মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসে বসে টিভি খবরের মারফত কোমি জানতে পারেন, তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর হাতে চলে আসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সই করা চিঠি।

Advertisement

কোমি বরখাস্তের ঘটনায় যে এতটা চাঞ্চল্য হবে, তা কেউই আঁচ করতে পারেনি। কারণ, কোমির বন্ধুর থেকে শত্রুর সংখ্যাই বেশি। ভোটের ঠিক আগে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে ই-মেল দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছিলেন কোমি। কয়েক দিন পরে হিলারিকে তিনি ক্লিনচিট দিলেও নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ভোটারদের মনে তৈরি হয়ে গিয়েছে হিলারির এক ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ ভাবমূর্তি। যার ফল স্পষ্ট হয়ে যায় নির্বাচনে। যার পুরোপুরি ফায়দা তুলে নেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সেই থেকে হিলারির কোপে এফবিআই কর্তা। কিন্তু কোমি যে ট্রাম্প শিবিরের নেকনজরে ছিলেন, এ রকম ভাবাটাও ভুল। প্রথম প্রথম কোমির ভূয়সী প্রশংসা করলেও হিলারিকে ক্লিনচিট দেওয়ার জন্য পরে বহুবার তাঁকে দুষেছেন প্রেসিডেন্ট। আর মার্কিন নির্বাচনে রুশ হ্যাকিংয়ের তদন্ত (যে দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা) চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় ট্রাম্পের কোমি-প্রীতি আরও কমেছে। যার পরিণতি— পিঙ্ক স্লিপ!

চাঞ্চল্য হওয়ার প্রধান কারণ, বরখাস্ত করার ধরন। কোনও পূর্বাভাস না দিয়ে দেশের গোয়েন্দা প্রধানকে এ ভাবে সরিয়ে দিয়ে নতুন নজির গড়েছেন প্রেসিডেন্ট। গত দু’দিন ধরে ট্রাম্পের সঙ্গে বারবার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের তুলনা করা হচ্ছে। কারণ ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির তদন্ত চলাকালীন তদন্তকারী কৌঁসুলিকে ছেঁটে ফেলেন নিক্সন। কালকে নিক্সন ফাউন্ডেশনের তরফে টুইট করে বলা হয়— ‘‘এফবিআই প্রধানকে সরিয়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট নিক্সনও নেননি!’’

বুধবার প্রাক্তন সহকর্মীদের চিঠি লিখে সরকারি ভাবে বিদায় নিয়েছেন কোমি। সংবাদমাধ্যমেও পাঠানো হয় সেই চিঠি। কোমি লিখেছেন, ‘‘বহু দিন ধরেই এই ধারণা আমার মনে বদ্ধমূল হয়েছে যে, এক জন প্রেসিডেন্ট যে কোনও কারণে এফবিআই প্রধানকে বরখাস্ত করতে পারেন। বা কোনও কারণ ছাড়াই। কী ভাবে আমাকে তাড়ানো হলো, বা কেন, সে সব নিয়ে আমি আলোচনা করব না। আশা করি আপনারাও করবেন না। শুধু একটা কথাই বলার আছে। এফবিআইকে আমেরিকার মানুষ এমন এক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখুক, যা সততা ও স্বাধীনতার প্রতীক। আশাকরি, এই অস্থির সময়ে এফবিআই কোনও ভাবেই তার লক্ষ্য থেকে বিচলিত হবে না। তা হলেই সুরক্ষিত থাকবে আমাদের দেশ। এ দেশের মানুষ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement