বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
এক সঙ্গে ১২টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং হাই কমিশনারদের তলব করে বাংলাদেশ সরকার হুঁশিয়ারি দিল, কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন বরদাস্ত করা হবে না।
বুধবার বিকেলে পদ্মা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, কানাডা, সুইৎজ়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন ইটালি, ডেনমার্ক ও সুইডেনের কূটনৈতিক মিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাঁদের বলেন, বাংলাদেশের উপনির্বাচন নিয়ে তাঁদের বিবৃতি কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে লঙ্ঘন করেছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে তাঁরা ফের এই কাজ করবেন না।
ঢাকা-১৭ আসনে ১৭ জুলাইয়ের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের উপরে শাসক দলের কর্মীদের চড়াও হওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন এই ১৩ রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনার। এর পরে এক সঙ্গে এত জন কূটনৈতিক প্রধানকে এক যোগে তলবের ঘটনা নজিরবিহীন। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী তাঁদের জানান, সে দিন কোথাও কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট পর্ব মেটার পরে ওই প্রার্থী হামলার শিকার হওয়ায় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। কাজেই ওই একটি ঘটনা দিয়ে সারা দিনের ভোটপর্বকে বিচার করাটা সত্যের অপলাপ হবে।
প্রতিমন্ত্রী তাঁদের বলেন, “১৯ তারিখে কূটনীতিকদের বিবৃতিতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অথচ তার আগেই দু’জন হামলাকারীকে চিহ্নিত করে পুলিশ গ্রেফতার করে। সুতরাং তাঁদের বিবৃতি বস্তুনিষ্ঠও নয়।”
শাহরিয়ার আলম জেনিভা কনভেনশন উল্লেখ করে বলেন, কূটনীতিকদের যাবতীয় বক্তব্য ও অসন্তোষ বিদেশ মন্ত্রককে জানানোর কথা। তার পরিবর্তে তাঁরা প্রকাশ্যে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন, যা কূটনৈতিক রীতি লঙ্ঘন। প্রতিমন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের বলেন, “এ বিষয়ে কূটনীতিকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, তাঁদের এই ধরনের আচরণে আস্থার সঙ্কট তৈরি হয়।” কূটনীতিকদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল জানতে চাওয়া হলে শাহরিয়ার আলম বলেন, “তাঁদের চার-পাঁচ জন কথা বলেন। তাঁরা জানান, কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারকে সাহায্য করাই তাঁদের লক্ষ্য।”