International News

কাবুলে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে রকেট হামলা, নিশানায় শান্তি সম্মেলনও

ঠিক কোন অঞ্চল থেকে রকেটটি ছোড়া হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কাবুলে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরা যে বাড়িতে থাকেন, সেই ইন্ডিয়া হাউস চত্বরেই রকেটটি আঘাত হেনেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ১৬:২৪
Share:

রকেট হানার পরে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে কাবুলে। কিন্তু ঠিক কোথা থেকে রকেটটি ছোড়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। —ফাইল চিত্র।

আফগানিস্তানে ফের সন্ত্রাসবাদী হানা। ফের আক্রমণের লক্ষ্য ভারতীয় দূতাবাস। কাবুলে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসভবন চত্বরে মঙ্গলবার সকালে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার ফলে কাবুলে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে ভারতীয় হাইকমিশনার এবং দূতাবাসের অন্য কর্মীরা নিরাপদেই রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। ২৩টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত শান্তি সম্মেলন ‘কাবুল প্রসেস’ আজই শুরু হয়েছে আফগানিস্তানের রাজধানীতে। সেই সম্মেলন স্থলের কাছেও এ দিন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ কাবুলের ভারতীয় দূতাবাস আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঠিক কোন অঞ্চল থেকে রকেটটি ছোড়া হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কাবুলে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরা যে বাড়িতে থাকেন, সেই ইন্ডিয়া হাউস চত্বরেই রকেটটি আঘাত হেনেছে। তবে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ইন্ডিয়া হাউজ কম্পাউন্ডের স্পোর্টস কোর্টে রকেটটি আছড়ে পড়েছে বলে খবর। শুধু ভারতীয় দূত মনপ্রীত ভোরা নন, দূতাবাসের অন্য কর্মীরাও থাকে ওই কম্পাউন্ডেই থাকেন। এই হামলায় কারও ক্ষতি হয়নি। তবে ভারতীয় দূতাবাস এবং আশপাশের অন্যান্য দূতাবাস ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কাবুলের বিভিন্ন অংশে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

ভারতীয় দূতাবাসে হামলা হওয়ার আগে কাবুলে আয়োজিত শান্তি সম্মেলন ‘কাবুল প্রসেস’-ও এ দিন সন্ত্রাসবাদীদের নিশানা হয়ে উঠেছিল। সম্মেলন স্থলের কাছেই এ দিন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে খবর। তালিবান আতঙ্ক মুছে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যেই কাবুল প্রসেসের আয়োজন। ২৩টি দেশের এই সম্মেলনে ভারতও অন্যতম অংশীদার। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি এ দিন সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের কিছু পরেই তা জঙ্গিদের লক্ষ্য হয়ে ওঠে। তবে সেই হানাতেও হতাহতের কোনও খবর নেই।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালেই তালিবানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তার পরই কাবুলের দুই এলাকা কেঁপে উঠেছে জঙ্গি হানায়। ছবি: এএফপি।

গত সপ্তাহেই ভয়াবহ জঙ্গি হানায় কেঁপে উঠেছিল কাবুল। ভারতীয় দূতাবাসের সামনেই প্রবল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল জঙ্গিরা। সেই হানায় মৃতের সংখ্যা ১৫০ ছুঁয়েছে। ২০০১ সালে আফগানিস্তান থেকে তালিবান শাসনের অবসান ঘটার পর থেকে এত বড় বিস্ফোরণ কাবুলে আর ঘটেনি। তার রেশ কাটার আগেই ফের ইন্ডিয়া হাউস চত্বরে রকেট আছড়ে পড়ায়, যথেষ্ট উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। আফগানিস্তানে পরিকাঠামো বৃদ্ধি এবং উন্নয়নের মাধ্যমে সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে ভারত যে রকম সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে, তালিবানরা তা ভেস্তে দিতে চায় বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত। সেই কারণেই বার বার ভারতীয় দূতাবাসকে নিশানা করা হচ্ছে বলে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ২০১৬-র মার্চে আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরে আক্রান্ত হয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস। সেই হামলায় অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ বছর রমজান মাস শুরু হতেই কাবুলের বুকে বার বার জঙ্গি আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠছে ভারত।

আরও পড়ুন: কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল সাত দেশ

কাবুল শহরতলির যে এলাকায় ভারতীয় দূতাবাস রয়েছে, অন্য অনেকগুলি দেশের দূতাবাসই সেই এলাকাতেই। আফগান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলিও গড়ে তোলা হয়েছে সেখানেই। প্রশাসনিক এবং কূটনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, ওই এলাকাকে সারা বছরই প্রায় দুর্গ বানিয়ে রাখে আফগান সরকার। তা সত্ত্বেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে পর পর দু’বার ভারতীয় দূতাবাস জঙ্গিদের লক্ষ্য হয়ে উঠল।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি এ দিন সকালে কাবুল প্রসেস-এর উদ্বোধনী ভাষণে তালিবানদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। হয় শান্তি প্রক্রিয়ায় সামিল হোক তালিবান, না হলে ফল ভোগার জন্য প্রস্তুত হোক— বার্তা প্রেসিডেন্ট ঘনির। কিন্তু আফগান প্রেসিডেন্টের এই ভাষণের দিনেই কাবুলের বুকে বিস্ফোরণ ঘটাল জঙ্গিরা, চালাল রকেট হামলাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement