ছেলে-মেয়েদের লিঙ্গসাম্যের পাঠ দিলে গার্হস্থ্য হিংসা বেড়ে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করলেন ব্রাজ়িলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দামারেস আলভেস।
কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট খাইর বোলসোনারোর ২২ জনের ক্যাবিনেটে দু’জন মহিলা মন্ত্রীর মধ্যে এক জন এই দামারেস। নারী, পরিবার কল্যাণ এবং মানবাধিকার দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘‘ছেলেমেয়েদের ছোটবেলা থেকে শেখানো হচ্ছে, নারী ও পুরুষ সমান। এটা খুবই মারাত্মক। কোনও বাচ্চা ছেলে যদি ভাবে, মেয়েটা আমার সমান-সমান, আমি ওর সঙ্গে মারামারি করতে পারি, তা হলে তো মুশকিল। মেয়েদের তাতে আরও বিপদ।’’
তা হলে উপায়? দামারেসের নিদান, ‘‘ছেলেদের ছোটবেলা থেকে শিভালরি শেখানো উচিত। নারী ও দুর্বলের প্রতি কী ভাবে দয়া দেখাতে হয়, কী ভাবে তাদের রক্ষা করতে হয়, সেটাই শেখানো দরকার। বোঝানো দরকার, মেয়েরা আলাদা, তাই মেয়েদের সে ভাবেই ভালবাসতে হবে।’’ কী ভাবে? দামারেসের কথায়, ‘‘ছোট্টবেলা থেকে ছেলেদের শেখাতে হবে, মেয়েদের জন্য গাড়ির দরজা খুলে দিতে হয়, মেয়েদের মাঝেমধ্যেই ফুল উপহার দিতে হয়।’’
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সালে ৪৫৩৯ জন মহিলাকে খুন করা হয়েছে ব্রাজ়িলে। তার মধ্যে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার ১১৩৩ জন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হিসেব, দেশে প্রতি ঘণ্টায় ৫৩৬ জন মেয়ের উপরে শারীরিক বা যৌন হেনস্থা হয়। এই ধরনের হিংসা ঠেকাতে কী পদক্ষেপ করছেন মন্ত্রী? দামারেস বলেন, ‘‘আমরা বিউটি পার্লারে কর্মরত মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যাতে তাঁরা গার্হস্থ্য হিংসার কোনও ঘটনা ঘটলে বুঝতে পারেন। হেয়ারড্রেসারদের বলা হচ্ছে, কোনও মহিলার মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে কি না দেখতে। ম্যানিকিওরিস্টদের বলা হয়েছে, খেয়াল রাখতে, কোনও মহিলার হাত কাঁপছে কি না।’’
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন দামারেস। শপথ নেওয়ার সময়ে বলেছিলেন, ‘‘এমন একটি যুগ ফিরিয়ে আনতে চাই যেখানে বাচ্চা ছেলেরা শুধু নীল, আর বাচ্চা মেয়েরা গোলাপি রঙের জামা পরবে!’’