তালিবান শাসনে ফের অনিশ্চয়তায় আফগান মহিলারা। ছবি: রয়টার্স।
তিন সপ্তাহেই সুর বদলাল তালিবান। মহিলাদের অধিকার প্রসঙ্গে ফিরে গেল তিন দশক আগের অবস্থানে। তালিবানের নয়া মুখপাত্র সৈয়দ জাখরুল্লা হাসিমি জানিয়ে দিলেন, আফগানিস্তান মন্ত্রিসভায় ভবিষ্যতেও কোনও মহিলার ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
হাসিমি একটি আফগান সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘মন্ত্রিত্ব করা নয়, সন্তানের জন্ম দেওয়াই মহিলাদের কাজ।’’ কিন্তু মহিলাদের মন্ত্রিত্ব করতে বাধা কোথায়? প্রশ্নকর্তার উদ্দেশে তালিবান মুখপাত্রের মন্তব্য, ‘‘আপনি কি তাঁদের (মহিলা) ঘাড়ে এমন দায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যার ভার তাঁরা বইতে পারবেন না? মন্ত্রিত্ব করা মহিলাদের কাজ নয়। তাই আমরা কোনও মহিলাকে মন্ত্রী করিনি।’’
দু’দশক পরে ক্ষমতায় ফিরে মন্ত্রিসভাও গড়ে ফেলেছে তালিবান। আফগানিস্তানের নয়া তালিবান মন্ত্রিসভায় এক জন মহিলাও স্থান পাননি। অথচ আফগান সমাজের অর্ধেকই মহিলা। এ বিষয়ে হাসিমির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা তাঁদের অর্ধেক মনে করি না। গত ২০ বছর আমেরিকার মদতে গড়া সরকার মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার নামে পতিতাবৃত্তি চালু করেছিল। আমরা তা হতে দেব না।’’
অথচ কাবুল দখলের পরেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবান সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধান এমানুল্লা সামাগনি বলেছিলেন, ‘‘শরিয়তি আইনের পরিধির মধ্যে থেকে যদি মহিলারা প্রশাসন ও সরকারে অংশ নিতে চান তাঁদের স্বাগত।’’ কিন্তু তার পরেও রাজধানী কাবুল-সহ আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে মহিলাদের উপর অত্যাচার এবং নানা বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। চাকরিও হারিয়েছেন বহু মহিলা।
অধিকারের দাবিতে সম্প্রতি আফগান মহিলাদের একাংশকে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গিয়েছে। দাবি উঠেছে মন্ত্রিসভায় মহিলাদের শামিল করারও। এ প্রসঙ্গে হাসিমির মন্তব্য, ‘‘যে মহিলারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা আফগান সমাজের প্রকৃত প্রতিনিধি নন।’’