পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অন্তত ছ’হাজার ট্রাকে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে খাদ্যশস্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ছবি: রয়টার্স।
খেতে পাচ্ছে না পাকিস্তানের আমজনতা। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে সে দেশের সেনাকেও পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করার ক্ষমতা হারিয়েছে শাহবাজ শরিফের সরকার। আর এই সঙ্কটের অবস্থায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অন্তত ছ’হাজার ট্রাকে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে খাদ্যশস্য থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। কারণ সেই খাবার সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে আসতেই দিচ্ছে না আফগানিস্তানের তালিবান সরকার।
রবিবার তালিবান সরকারের তরফে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের তোরখাম সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তোরখাম সীমান্ত দিয়েই ইসলামাবাদ এবং কাবুলের মধ্যে যাবতীয় পণ্য সরবরাহ করা হয়। পর্যটকরাও এই সীমান্ত দিয়ে দু’দেশে যাতায়াত করেন। কিন্তু হঠাৎ করে এই সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্তে ব্যবসায়িক দিক থেকে ক্ষতির মুখে পড়েছে দুই দেশই। তবুও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় তালিবান।
পাকিস্তান-আফগানিস্তান জয়েন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক জিয়া উল হক সরহদি বলেছেন, “পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুই দেশের ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি হচ্ছে। সীমান্তের দুই পাশে সারি সারি ট্রাক আটকে আছে।’’ সরহদি জানান, রবিবার থেকে প্রায় ছ’হাজার ট্রাক উভয় পাশে আটকা পড়েছে।
সরহদির দাবি, আফগানিস্তান বহু পণ্যের জন্য পাকিস্তানের উপর নির্ভরশীল। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে ফল এবং শাকসবজি ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কারণ গত তিন দিন ধরে ট্রাকগুলি পথে আটকা পড়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার পণ্য গাড়িতে থেকে পচে যাচ্ছে।’’
তোরখাম সীমান্তে কর্তব্যরত এক পাকিস্তানি আধিকারিকের দাবি পেশোয়ারের মসজিদে হামলার পর থেকে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানের পেশোয়ারে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আর সে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। অন্য দিকে, তালিবান চাইছে পাকিস্তান যেন কোনও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই তাদের নাগরিকদের পেশোয়ার বা অন্য জায়গায় চিকিৎসার জন্য অবাধে প্রবেশ করতে দেয়। আর তা নিয়েই সমস্যার জেরে সীমান্ত বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ওই পাক আধিকারিকের দাবি।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউজ় ইন্টারন্যাশনাল’ জানিয়েছে, উভয় পক্ষের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই তালিবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং আলোচনার জন্য তারা একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে।