ছবি: রয়টার্স
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পর এবার চিন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। রবিবার দক্ষিণ চিনের গুয়াংদোঙ প্রদেশে টাইফুন মাঙখুত আছডে় পড়ে। দিন কয়েক আগে হংকংয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল এই বিধ্বংসী ঝড়। তার আগে ফিলিপিন্স তছনছ করে দেয়। সেখানে ৪৯ জন প্রাণ হারান।
রবিবার গুয়াংদোঙের জিয়াংমেন শহরে প্রথম আছড়ে পড়ে টাইফুন মাঙখুত। ঘন্টায় ১৬২ কিমি বেগে ঝড় বইতে শুরু করে। সঙ্গে ভারী বর্ষণ চলতে থাকে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত ছিল প্রশাসন। ইতিমধ্যে ২০ লক্ষ ৪৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপকূলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৪৮ হাজার মাছ ধরার নৌকো। প্রায় ২৯ হাজার নির্মাণ কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে ৬৩২টি পর্যটন কেন্দ্র।
এ ছাড়াও বন্ধ রাখা হয়েছে হাইনান প্রদেশের দু’টি বিমান বন্দরেরর মোট ৪০০টি বিমানের উড়ান। উপকূলবর্তী সমস্ত স্কুল ও গেস্ট হাউসও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শেনঝ্যাং বিমান বন্দর হয়ে যে বিমানগুলি যাওয়ার কথা ছিল, বাতিল করা হয়েছে সেগুলি। শনিবার সন্ধে থেকে দূরপাল্লার ট্রেনও তুলে নেওয়া হয়েছে। গুয়াংদোঙের উপকূলবর্তী শহরগুলির সমস্ত জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। এখনও পর্যন্ত ঝড়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ চিনের গুয়াংদোঙ, হাইনান এবং গুয়াংশি জুয়াং প্রদেশ । আপাতত সোমবার পর্যন্ত হাইনান ও গুয়াংদোঙের সমস্ত পর্যটন স্থলগুলি বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে।
শনিবার সকাল থেকে কিয়ংঝৌ প্রণালীর নৌ পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। গুয়াংদোঙ ও হাইনান প্রদেশকে সংযুক্ত করেছে সেটি। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঘরছাড়া মানুষের জন্য ৩,৭৭৭টি জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র গড়েছে গুয়াংদোঙ প্রশাসন। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষে সেখানে মাথা গুঁজতে পারেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রয়েছে গুয়াংদোঙের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদর দফতরের। প্রতিটি নির্মাণকেন্দ্রে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে তারা। যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা যায়।
উপকূলবর্তী শহরগুলিতে সেনা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ১০০০ লাইফবোট। যাতে জরুরি অবস্থায় কাজে লাগে। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে সে দেশের আবহাওয়া দফতর। সংবাদ মাধ্যমে লাগাতার আপডেট দিয়ে চলেছে তারা। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে জনসাধারণের কাছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম যাতে না বাডে়, সে দিকে নজর রেখেছে পুরসভার বাণিজ্য বিভাগ। তবে আগেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে মজুত করে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।