—প্রতীকী ছবি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কায় পা রাখতেই বড় ধাক্কা খেল চিন। কলম্বো বন্দরে চিনা সাবমেরিন ঢোকার অনুমতি দিল না শ্রীলঙ্কা। এ মাসেই শ্রীলঙ্কার রাজধানী শহরের উপকূলে একটি ডুবোজাহাজ পাঠাতে চেয়েছিল বেজিং। কিন্তু কলম্বো জানিয়ে দিয়েছে, চিনা ডুবোজাহাজকে কলম্বোয় নোঙর করতে দেওয়া হবে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আজই শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছেন। চিনা সাবমেরিনকে শ্রীলঙ্কায় নোঙরের অনুমতি না দেওয়ার খবরও আজই সামনে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা বলছেন, শ্রীলঙ্কার এই বার্তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
২০১৪ সালের অক্টোবরে শেষ বার কোনও চিনা সাবমেরিনকে নোঙরের অনুমতি দিয়েছিল কলম্বো। তখনও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষেই। ২০১৫-র জানুয়ারিতে ক্ষমতার হাতবদল হয়, প্রেসিডেন্ট হন মৈত্রিপালা সিরিসেনা। সেই থেকে এ পর্যন্ত চিনা নৌসেনার কোনও সাবমেরিনকে কলম্বো বন্দরে নোঙর করতে দেওয়া হয়নি। রাজাপক্ষের আমলে চিনা সাবমেরিনের কলম্বো প্রবেশ ভারতকে বেজায় চটিয়েছিল। নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কে আগ্রহী সিরিসেনা সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি মোটেই চান না। সেই কারণেই চিনা সাবমেরিনকে কলম্বোয় বন্দরে ঢোকার অনুমতি শ্রীলঙ্কা দিল না, বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
দু’দিনের সফরে শ্রীলঙ্কা গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলম্বোর এক বৌদ্ধ মন্দিরে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী এবং বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী। —এপি।
কলম্বোয় সাবমেরিন পাঠানোর জন্য চিন ঠিক এই সময়টাই বেছে নিল কেন, তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে। শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, ১৬ মে কলম্বো বন্দরে নিজেদের সাবমেরিন পাঠাতে চেয়েছিল চিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ১১ এবং ১২ মে শ্রীলঙ্কা সফরে থাকবেন, সে কথা কারও অজানা ছিল না। শ্রীলঙ্কা সফর সেরে মোদী নয়াদিল্লি ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই চিনা ডুবোজাহাজের কলম্বো পৌঁছনোও যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, সে বিষয়েও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদ এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা একমত। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, চিন পরিকল্পনা করেছিল যে মোদীর সফরের আশপাশের কোনও তারিখেই কলম্বোয় নিজেদের ডুবোজাহাজ পাঠিয়ে ভারতকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে, কলম্বোর উপর বেজিং-এর প্রভাব কতটা। সে পরিকল্পনা আপাতত সফল হতে দিল না শ্রীলঙ্কা। ১৬ মে চিনা সাবমেরিনকে কলম্বোয় নোঙর করতে দেওয়া হবে না, সে কথা চিনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পরে কখনও চিনা ডুবোজাহাজকে সেই অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলেও কলম্বো সূত্রের খবর।