প্রতীকী ছবি।
ভারতীয়দের জন্য অভিবাসী নীতি বেশ কিছুটা শিথিল করতে পারে ব্রিটেন। আজ একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী লিজ় ট্রাস বিশ্ব বাণিজ্যমঞ্চে চিনের আধিপত্য ঠেকাতে ভারতের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য নীতি রূপায়ণের কথা ভাবছেন। সেই লক্ষ্যেই অভিবাসন আইনে কিছু বদল আনা হবে। এবং এর ফলে লাভবান হবেন ব্রিটেনে আসা ভারতীয়েরাই।
সামনের সপ্তাহ থেকেই ভারত-ব্রিটেন বাণিজ্য বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। অভিবাসন আইনে বদল এনে বরিস জনসন সরকার চাইছে, নয়াদিল্লি যাতে ব্রিটেনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি সই করে। নয়াদিল্লি অনেক দিন ধরেই ব্রিটেনের অভিবাসন নীতিতে কিছু বদল চাইছে। জনসন সরকারের আশা, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা আরও বেশি করে দ্বিপাক্ষিক লেনদেনে অংশ নেবেন। ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রেভেল্যানের (যাঁর মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক) এ মাসেই দিল্লি যাওয়ার কথা। সেই সফরেই নতুন বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রীর এই যৌথ প্রচেষ্টার অবশ্য বিরোধিতা করছেন আর এক প্রথম সারির ব্রিটিশ মন্ত্রী—ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেল। অভিবাসন আইনে যে কোনও ধরনের বদল আনার ঘোর বিরোধী তিনি। প্রীতির দাবি, অভিবাসন আইন আরও শিথিল করলে কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক দিক থেকে মার খাবেন ব্রিটেনের নাগরিকেরাই।
অভিবাসন নীতিতে কী ধরনের বদল আনতে চাইছেন বিদেশমন্ত্রী? বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্রিটেনের যে ধরনের অভিবাসন নীতি রয়েছে, সেই ধাঁচেই ভারতীয়দের জন্য কিছু নিয়ম চালু করা হবে। যেমন, কমবয়সি ভারতীয়েরা চাইলে এ দেশে এসে তিন বছর পর্যন্ত কোনও চাকরি করতে পারেন। তা ছাড়া, স্টুডেন্ট ভিসায় যাঁরা এ দেশে এসে পড়াশোনা করবেন, তাঁরা ডিগ্রি পাওয়ার পরে কিছু দিন ব্রিটেনে থেকে চাকরি করার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া, পর্যটন, বাণিজ্য বা চাকরি— বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভিসা ফি কমানোর কথাও ভাবছে ব্রিটিশ সরকার। এখন চাকরি করতে যাঁরা ব্রিটেনে আসেন, তাঁদের ওয়ার্ক ভিসার জন্য ১৪০০ পাউন্ড ফি দিতে হয়, স্টুডেন্ট ভিসা ফি ৩৪৮, পর্যটন ভিসা ফি ৯৫ পাউন্ড। ভারতে আসতে গেলে ব্রিটিশদের পর্যটন ভিসা ফি দিতে হয় ১১০ পাউন্ড, আর এক বছরের জন্য বাণিজ্য ভিসা ফি ১৬৫ পাউন্ড।
আমেরিকা বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের কোনও স্বতন্ত্র দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নেই। ফলে এই চুক্তি হলে লাভবান হবে নয়াদিল্লিও। অন্য দিকে, ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য চুক্তি করতে উদ্গ্রীব লন্ডন।