ছবি: রয়টার্স।
আবু ইব্রাহিম আল-হাসিমি আল-কুরেশি। আল বাগদাদির উত্তরসূরি হিসেবে ইতিমধ্যেই এই নাম ঘোষণা করে দিয়েছে আইএসের মুখপাত্র। বাগদাদির মতোই দলের পরবর্তী শীর্ষ নেতাকে ‘ওয়ারিয়র’ এবং ‘স্কলার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সেই অডিয়ো-ঘোষণায়। যোদ্ধা তো বটেই, তবে আবু ইব্রাহিমের ‘পাণ্ডিত্য’ যে ঠিক কোন কোন বিষয়ে, এখনও অন্ধকারে মার্কিন গোয়েন্দারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু সাফ বললেন, ‘‘আইএসের পরবর্তী নেতা কে হচ্ছে, আমরা তা খুব ভাল করেই জানি।’’ ট্রাম্প নিজে যে-হেতু সবিস্তার আর কিছুই বলেননি, আজ তাই দিনভর জল্পনা ছড়াল প্রেসিডেন্টের গত কালের টুইট নিয়ে।
কে এই আবু ইব্রাহিম? এখনও পর্যন্ত এর একটিও ছবি পাওয়া যায়নি। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার আল বাগদাদির মৃত্যুর ভুয়ো খবর ছড়িয়েছে। এবং প্রত্যেক বারই তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বেশ কয়েকটি নাম উঠে এসেছে জল্পনায়, এমনকি সংবাদমাধ্যমেও। কিন্তু আবু ইব্রাহিমের নাম যে তেমন শোনা যায়নি, বলছেন সিরিয়া-ইরাক বিশেষজ্ঞরাই। বাগদাদির মৃত্যুর খবর স্বীকার করে গত বৃহস্পতিবার আইএসের মুখপাত্র আবু হামজা আল-কুরেশি প্রায় চমকে দেওয়ার মতোই দলের নতুন মাথা হিসেবে ইব্রাহিমের নাম ঘোষণা করে। ট্রাম্প তা হলে কিসের ভিত্তিতে বললেন, ‘‘আমরা সব জানি...’’? যেখানে খোদ গোয়েন্দা কর্তারাই ইব্রাহিমের ঠিকুজি উদ্ধারে কালঘাম ছুটিয়ে ফেলছেন! অনেকেই বলছেন, এটা ট্রাম্পের চমক। শত্রুপক্ষকে চাপে রাখতে কূটনৈতিক কৌশল।
বৃহস্পতিবারের অডিয়ো-বার্তায় আমেরিকাকে কার্যত হুমকি দেওয়ার ঢঙেই আইএস মুখপাত্রকে বলতে শোনা যায়— ‘‘বাগদাদির মৃত্যুতে আনন্দ করার কিছু নেই। সন্ত্রাসের আর কতটুকুই বা দেখেছেন? আমাদের নতুন নেতা আগের সব স্মৃতি ভুলিয়ে ছাড়বেন।’’ সিরিয়ায় এখনও কুর্দ এবং ইরাকি বাহিনীর একটা গোপন নেটওয়ার্ক রেখে দিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন গোয়েন্দারাও নিজেদের মতো করে আইএসের সব স্তরের ছোট-বড় জঙ্গির ফোন-কল, মেসেজ ইত্যাদিতে আড়ি পেতে ইব্রাহিমের রকমসকম, কাজের ধরন বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গোয়েন্দাদের একটা বড় অংশের আশঙ্কা, নতুন নেতার অধীনে ফের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে আইএস। বিশেষত, উত্তর-পূর্ব সিরিয়া থেকে সেনা সরানোর পরে এবং তুর্কি বাহিনীর কুর্দ-অভিযানের জেরে সেই আশঙ্কা আরও বড় আকার নিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রতিবাদের শুক্রবারে ফের গ্রেফতার ফন্ডা
হোয়াইট হাউসের ‘গ্লোবাল এনগেজমেন্ট’ বিভাগের প্রাক্তন অধিকর্তা ব্রেট ব্রুয়েন যেমন বললেন, ‘‘বাগদাদির মৃত্যুকে যুদ্ধজয় হিসেবে ধরে নেওয়ার কোনও মানেই হয় না।’’ গত কয়েক বছরে ন্যাটো বাহিনীর চাপে কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আইএস এ বার অনেকটাই অনলাইন-নির্ভর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।