ফাইল চিত্র।
সেনাপ্রধান এম এম নরবণে আজ বলেছেন, “চিন সীমান্ত থেকে সেনা পিছোনোর প্রক্রিয়া মসৃণ। এতে দু দেশেরই জয় হল।” আর বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রাথমিক পরিসংখ্যান গত কাল জানিয়েছে, সীমান্তে লাগাতার সংঘাতের পরিস্থিতির মধ্যেও গত বছর ভারতের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্য শরিক ছিল চিনই।
কূটনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠছে, চিনের সঙ্গে সীমান্তে মসৃণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যেটুকু লাগাম দেওয়া হয়েছিল, তা আবার শিথিল করে দেওয়া হবে? আগামী বছরও কি চিনই ভারতের সেরা বাণিজ্য দোসর থাকবে? রাজনৈতিক স্তরে প্রশ্ন উঠছে, কোথায় আত্মনির্ভরতা? বরং চিনের মতো বৈরী দেশের প্রতিও অতিনির্ভরতার ছবিই দেখা যাচ্ছে বাণিজ্য ক্ষেত্রে। বিরোধী শিবির থেকে এই আশঙ্কাও উঠে আসছে যে, তবে কি বাণিজ্য ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়ার বিনিময়েই চিনকে পিছু হটানো সম্ভব হল?
সেনা পিছোনো নিয়ে নরবণের বক্তব্য, “আমি মনে করি খুবই ভাল ফলাফল হয়েছে। এতে দু’দেশেরই জিত (উইন-উইন) হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে জাতীয় স্বার্থে আমরা সংকল্পে অটল ছিলাম। চিনের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত তার প্রত্যাশিত পথেই চালিত করতে পেরেছে।” তাঁর কথায়, “প্রতিবেশী হিসেবে আমরা সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিতি চাই। দু’দেশের মধ্যে আগে যে সব যোগাযোগ ও আদানপ্রদান চলছিল, তা ভবিষ্যতেও বজায় থাকুক।”
আত্মনির্ভরতার কী হবে?
ভারতের উপভোক্তারা সস্তার চিনা পণ্যে অভ্যস্ত। ফলে দেশীয় বাজারের ক্ষেত্রে ভারত কতটা আত্মনির্ভর হতে পারল, সেটা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে উঠছে। ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা মেটানোর জন্য পরিবর্ত জোগানের ব্যবস্থা না-থাকার কারণেই কি চিনের উপর নির্ভরতা কমার বদলে বেড়েই চলেছে? বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, আগেভাগেই চিনা পণ্য বন্ধ না-করে ভারত সরকারের উচিত ছিল, নিজস্ব উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া।
গত কাল যে প্রাথমিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রক, তাতে দেখা যাচ্ছে, এত কূটনৈতিক দৌত্যের পরেও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতি কমছে না। সব মিলিয়ে সীমান্তে আপৎকালীন সমস্যা মিটে যাওয়ার পর বেজিংয়ের প্রতি বাণিজ্যিক ভাবে কী বার্তা দেবে নয়াদিল্লি, আপাতত এখন সেটাই দেখার।