Astrazeneca

ভুলের ফসল, না সাফল্য, প্রশ্নের মুখে অক্সফোর্ড

অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সিইও পাস্কাল সরিয়ট এক সাক্ষাৎকারে জানান, টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে যেটুকু জানা গিয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১২
Share:

ছবি এএফপি।

সস্তা, সহজলভ্য, সহজ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া— অক্সফোর্ডের তৈরি সম্ভাব্য করোনা-ভ্যাকসিনটির গুণের তালিকা দীর্ঘ। ভারত-সহ বহু দেশ তাদের দিকেই তাকিয়ে। কিন্তু টিকা নিয়ে ধন্দ ক্রমশ বাড়ছে। কারও কারও দাবি, অক্সফোর্ডের ‘দেড় ডোজ়’-এর সাফল্য, পুরোটাই ‘অ্যাক্সিডেন্টাল’। এই পরিস্থিতিতে অক্সফোর্ডের সঙ্গে জোট বাঁধা ওষুধ প্রস্তুতকারী সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সিইও-র কথায় ইঙ্গিত মিলেছে, হয়তো বিশ্ব জুড়ে টিকার নতুন করে ট্রায়াল শুরু করবেন তাঁরা। ভারতে অক্সফোর্ডের টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অবশ্য তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। জানিয়েছে, প্রতিষেধকটি নিরাপদ এবং ভারতে নির্বিঘ্নেই চলছে ট্রায়াল।

Advertisement

অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সিইও পাস্কাল সরিয়ট এক সাক্ষাৎকারে জানান, টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে যেটুকু জানা গিয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার। তাই একটি অতিরিক্ত সমীক্ষা প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘হয়তো এটা আরও একটা আন্তর্জাতিক সমীক্ষাই হবে। কিন্তু সময় অনেক কম লাগতে পারে। কারণ, আমরা জানি, টিকার কার্যকারিতা বেশি। তাই হয়তো কম সংখ্যক রোগীর দরকার পড়বে।’’

অক্সফোর্ড গত সোমবার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করে জানায়, তারা গড়ে ৭০ শতাংশ সফল হয়েছে। দু’টি প্রক্রিয়ায় ট্রায়াল চলেছে। একই দাওয়াই, এক দলকে দেওয়া হয়েছিল দেড় ডোজ়, অন্য দলকে দেওয়া হয়েছিল দুই ডোজ়। যাঁদের কম ডোজ় দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের শরীরে অক্সফোর্ডের তৈরি চ্যাডক্স১ ভাল কাজ দিয়েছে। ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। কিন্তু যাঁদের বেশি ডোজ় দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে মাত্র ৬২ শতাংশ কাজ দিয়েছে ভ্যাকসিন। ‘গড়ে’ ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে তারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাশ্মীরের কথা নেই ওআইসি-তে

কিন্তু একই দাওয়াইয়ের রিপোর্টে এত তারতম্য কেন? অক্সফোর্ডের আগে আমেরিকার দুই সংস্থা ফাইজ়ার ও মডার্নাও তাদের টিকার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। কিন্তু কেউ এমন ‘গড় নম্বর’ দেয়নি। চ্যাডক্স১ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে যে, কেন কম ডোজ় কাজ দিল, আর বেশি ডোজ় কাজ দিল না! জবাব খুঁজতে গিয়ে আতান্তরে বিজ্ঞানীরা। সোমবার বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে। এ পর্যন্ত জানা গিয়েছে, দেড় ডোজ়ের টিকা-পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হয়েছিল কমবয়সি স্বেচ্ছাসেবকদের উপরে। ট্রায়ালে যাঁরা দেড় ডোজ়ের ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন, তাঁদের সবারই বয়স পঞ্চান্নর মধ্যে। কিন্তু দ্বিতীয় পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়েছিল বয়স্কদের উপরেও। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বয়স্কদের উপরে কম কাজ দিচ্ছে টিকা?

ট্রায়ালের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট ঘোষণার সময়ে অক্সফোর্ড জানায়, যে পদ্ধতিটি বেশি কাজ দিয়েছে, (অর্থাৎ দেড় ডোজ়ের টিকা) সেটিই অনুসরণ করা হবে। কিন্তু তাতে খটকা যাচ্ছে না। কেন দু’রকম রিপোর্ট, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্রের জন্য তারা বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আবেদন জানানোর কথা ভাবছে। কিন্তু শোনা যাচ্ছে আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ টিকাটিকে হয়তো ছাড়পত্র দেবে না।

আরও পড়ুন: প্রতিষেধকে ধাক্কা! অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় ত্রুটি, স্বীকার করল সংস্থা

অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আমেরিকার ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের প্রধান। তাঁর দাবি, দেড় ডোজ়ের প্রক্রিয়াটি ভুলবশত ঘটেছিল। ভ্যাকসিনের ভায়ালে কম পরিমাণ দাওয়াই ছিল। সেটিকেই ‘দেড় ডোজ়’ বলে চালাচ্ছে অক্সফোর্ড।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement