Afghanistan Crisis

Afghanistan Crisis: দেশে ফিরতে পারবেন? তালিবানি আশ্বাসেও ভয় কাটছে না প্রথম আফগান মহিলা বিমানচালকের

গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বেসরকারি বিমান সংস্থা ‘ক্যাম এয়ার’-এর যাত্রিবাহি বিমান চালিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন মিরাজ়াই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০৭
Share:

মাসখানেক আগে এক আফগান উড়ানে সে দেশের প্রথম মহিলা বিমানচালক মোহাদেশে মিরাজ়াই (ডান দিকে)। পাশে ইউক্রেনীয় সহ-পাইলট ভেরোনিকা বরিসোভা।

যে পাইলটেরা দেশ ছেড়েছেন তাঁরা ফিরুক আফগানিস্তানে। যোগ দিন কাজেও। ক্ষমতায় আসার পর বার বার এই বার্তাই দিয়েছে তালিবান। কিন্তু ফিরতে পারবেন কি মোহাদেশে মিরাজ়াই? ফিরলেও ফের বিমান নিয়ে আকাশে ওড়ার অনুমতি কি আদৌ দেওয়া হবে তাঁকে? প্রশ্নগুলো রয়েই গিয়েছে।

Advertisement

বছর বাইশের মিরাজ়াই আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা বিমানচালক। মাত্র মাস ছয়েক আগে, গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বেসরকারি বিমান সংস্থা ‘ক্যাম এয়ার’-এর যাত্রিবাহি বিমান চালিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন মিরাজ়াই। সে দিন তিনি কাবুল থেকে ‘বোয়িং ৭৩৭’ নিয়ে উড়ে গিয়েছিলেন হেরাট। উড়ানটির ‘ক্রু’ সদস্যরা সকলেই ছিলেন মহিলা। আফগানিস্তানের আকাশে সে দিন লেখা হয়েছিল এক নতুন ইতিহাস।

এই ‘ঐতিহাসিক’ উড়ানের সাক্ষী ছিলেন জনপ্রিয় ‘অ্যাভিয়েশন ইউটিউবার’ জশ কাহিল। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে সেই উড়ানের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিলেন জশ। মিরাজ়াই-সহ অন্য ক্রু সদস্যদেরাও ওই ভিডিয়োতে তাঁদের কথা তুলে ধরেছিলেন। এ রকম উড়ানের সঙ্গী হতে পেরে তাঁরা সকলেই ছিলেন উচ্ছ্বসিত। জশের প্রশ্নের উত্তরে ককপিটে পাইলটের আসনে বসে মিরাজ়াই সে দিন বলেছিলেন, ‘‘বিমান চালাতে পেশিশক্তির দরকার হয় না। দরকার হয় মগজের।’’

Advertisement

মিরাজ়াই তো বটেই, বিমানের বাকি মহিলা সদস্যরাও তখন ভাবতে পারেননি যে ছ’মাসের মধ্যেই রীতিমতো দেশ ছেড়ে পালাতে হতে পারে তাঁদের। মিরাজ়াইয়ের সঙ্গে সেই উড়ানে সহ-পাইলট হিসেবে ছিলেন ইউক্রেনের ভেরোনিকা বরিসোভা। গত অগস্টে যে দিন একটি যাত্রিবাহি বিমান নিয়ে কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে মিরাজাইরা ওড়েন, সে দিনও সঙ্গে ছিলেন ভেরোনিকা। ছিলেন মিরাজ়াইয়ের প্রথম উড়ানের সঙ্গী সেই মহিলা ‘ক্রুয়ের’ সকলেই। তবে সে দিন আকাশে ওড়ার পর আফগানিস্তানের মাটিতে ফেরা নিয়ে যে বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হবে, তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি তাঁদের কেউ। জশ এর মতে, মিরজ়াইদের বিমানই ছিল শেষ যাত্রী বিমান, যেটি শহরটি তালিবানের দখলে আসার ঠিক আগে কাবুল ছেড়ে উড়ে যায়।

১৫ অগস্ট তালিবানের কাবুল দখলের পর মিরজ়াইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে টুইট করেছেন অনেকেই। সেখানে উড়ানের গতিবিধি দেখানোর বিভিন্ন ওয়েবসাইটের উল্লেখ করে কয়েকজন লেখেন, প্রথমে মিরাজ়াইয়ের উড়ান যায় ইরানে। সেখান থেকে ইউক্রেনে। তবে জশ টুইটারে জানিয়েছিলেন, মিরাজ়াইদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা জর্জিয়ায় গিয়ে পৌঁছেছেন।

বুধবার জশ ইনস্টাগ্রামে ছবি-সহ জানিয়েছেন, মিরাজ়াইদের সঙ্গে তাঁর মুখোমুখি কথা হয়েছে। তবে ঠিক কোথায় দেখা হয়েছে, তা উল্লেখ করেননি তিনি। শুধু জানিয়েছেন, মিরাজ়াইরা ভাল আছেন। কিন্তু দেশে কি ফিরবেন মিরাজ়াই? সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য কারও কাছেই নেই। এ দিকে, ইতিমধ্যেই নিজেদের অধিকারের দাবিতে কাবুলের পথে নেমে চাবুক পিঠে পড়েছে আফগান মহিলাদের। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেশে ফিরলেও তালিবানের আশ্বাস মতো বিমানের ককপিটে বসার সুযোগ কি পাবেন তিনি? সে উত্তরও অবশ্য অমিল।

আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে আকাশে ওড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব জুড়ে শিরোনামে উঠে আসন মিরজ়াই। তবে বিষয়টি তখনও ভাল ভাবে নেয়নি তালিবান। এখন ক্ষমতা দখলের পর তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কি বদলাবে, সন্দিহান অনেকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement