লন্ডনের রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় প্রতিবাদের ঢেউ গিয়ে পড়ল লন্ডনের রাস্তাতেও। লন্ডনে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবাসীদের একটি সংগঠন মণিপুরের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মৌন মিছিলের আয়োজন করে। সমাজের নানা স্তরের মানুষ সেই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন।
লন্ডনের রাস্তায় মণিপুরের ভিডিয়োকাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল করেন মূলত মহিলারা। তাঁদের পরনে ছিল সাদা রঙের পোশাক। সাদা মাস্ক পরে মুখ বন্ধ করে রেখেছিলেন তাঁরা। মণিপুরে নারীদের উপর অত্যাচার করে তাঁদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন প্রতিবাদীরা।
মৌন মিছিলে যাঁরা হেঁটেছেন, তাঁদের হাতে বেশ কিছু প্ল্যাকার্ড ছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘‘নারীর শরীর যুদ্ধক্ষেত্র নয়।’’ ‘‘আমাদের নীরব করে দেওয়া হয়েছে।’’ ‘‘মণিপুরে যে ভাবে ধর্ষণকে যুদ্ধের হাতিয়ার করা হচ্ছে আমরা তার কঠোর প্রতিবাদ করছি।”
লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাস থেকে শুরু করে এই মৌন মিছিল পার্লামেন্ট স্কোয়ারে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি পর্যন্ত চলে। মিছিলে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন হিংসাদীর্ণ মণিপুরে আটকে রয়েছেন। সেখানে মাসের পর মাস ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। অনেকের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। তাঁদের আশ্রয় নিতে হয়েছে সরকারি ত্রাণশিবিরে। ইন্টারনেট না থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। মাসের পর মাস ধরে যে হিংসার ছবি মণিপুরে দেখা গিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়েছিলেন প্রবাসী মণিপুরীরা।
আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। হিংসার কারণে এখনও পর্যন্ত দেড়শোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া ৬০ হাজারের বেশি। সেখানেই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। দাবি, তাঁদের গণধর্ষণও করা হয়। সেই ঘটনার ভিডিয়ো সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। বিরোধীরা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগ দাবি করেছে। ভারতের নানা প্রান্তে তো বটেই, মণিপুরের ভিডিয়োকাণ্ডের প্রতিবাদ এ বার দেখা গেল লন্ডনেও।