নিজের হাতে করে বোতলের দুধ খাইয়ে যাকে ছোট থেকে বড় করলেন, বছর দশেক পর সেই-ই কি না এমন প্রাণঘাতী আক্রমণ করল! কিন্তু কেন? হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সেই প্রশ্নেরই উত্তর হাতড়াচ্ছেন ৭২ বছরের মাইকেল হজ।
১৯৯০ সালে সপরিবার ইংল্যান্ড থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে আসেন তিনি। ইচ্ছে, এমন কিছু করবেন যা তাঁকে সিংহদের কাছাকাছি থাকার সুযোগ দেবে। সেই থেকে কত সিংহকেই সস্নেহে লালনপালন করেছেন তিনি। আক্রমণকারী সিংহ সাম্বাকেও সে ভাবেই বড় করেছিলেন হজ। তবে এমন অতর্কিতে আক্রমণ করায় হজের প্রাণ বাঁচাতে গুলি চালানো হয় সিংহটিকে লক্ষ্য করে। ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছে সেটি।
দক্ষিণ আফ্রিকার মারাকেলে প্রিডেটর সেন্টারে ‘লায়ন মোবাইল’ পরিষেবা বেশ জনপ্রিয়। একটি টুর ট্রাকের (চারিদিকে খাঁচা লাগানো) ভিতর পর্যটকদের ঢুকিয়ে, চারপাশে মুরগির মাংস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। যাতে খুব কাছ থেকে জঙ্গলের রাজাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন পর্যটকরা। একজন কর্মী সিংহদের খাঁচার কাছে আনতে খাঁচার বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। তবে ঘটনার দিন হঠাৎ সব চেনা হিসেব উল্টে দিল সাম্বা।
মোবাইল ট্রাকটির থেকে খানিক দূরেই ঘাসের উপর দাঁড়িয়ে ছিল সেদিন। ভ্যানটি যাতে নির্বিঘ্নে ঢুকতে পারে তাই জঙ্গলের ঘেরাটোপের বাইরে থেকে নিয়ম মতোই তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা চলছিল। তবে সে দিকে আমল না করে, সে অন্য কিছু একটা দেখে যাচ্ছিল। ট্রাক থেকে নেমে হজ দেখেন, কিছু একটা পড়ে রয়েছে মাঠে। তখনই হঠাৎ তাঁকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে সাম্বা। গলায় কামড় বসিয়ে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। তখনই হজের প্রাণ বাঁচাতে গুলি চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয় হজকে।