ত্রস্ত: ম্যানহাটনের রাস্তায় গিজগিজ করছে পুলিশের ভ্যান ও দমকলের গাড়ি। সোমবার বিস্ফোরণের পরে। ছবি: এপি
সকাল সাতটা কুড়ি। সপ্তাহের প্রথম দিনের ব্যস্ততা রাস্তায়। হঠাৎ কেঁপে উঠল শহরের সব থেকে জনবহুল এলাকা। জঙ্গি হানা! ছুটতে শুরু করল ছত্রখান জনতা। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই পুলিশের ভ্যান, দমকলের গাড়ি আর অ্যাম্বুল্যান্সে ভরে গেল রাস্তা।
নিউ ইয়র্কের কেন্দ্রবিন্দু ম্যানহাটনের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে আজ সকালের এই বিস্ফোরণে জখম হয়েছে আততায়ী। অল্প পুড়ে গিয়েছেন আরও চার জন। বাস টার্মিনালের নীচেই টাইমস স্কোয়ার ও পোর্ট টার্মিনাল সাবওয়ে স্টেশন। নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ হয়েছে দু’টি স্টেশনের সংযোগকারী টানেলে। তখনই খালি করে দেওয়া হয় স্টেশন দু’টি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাস টার্মিনালও।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ সূত্রের খবর, দুষ্কৃতী আইএস ভাবাপন্ন ২৭ বছর বয়সি এক বাংলাদেশি নাগরিক। নাম আকায়েদ উল্লাহ। গত সাত বছর ব্রুকলিনে বসবাস করেছে সে। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে এফবিআই ও পুলিশ। জেরায় আকায়েদ জানিয়েছে, বড় মাপের বিস্ফোরণ ঘটানোর লক্ষ্যে দেহে পাইপ বোমা বেঁধে সাবওয়ে স্টেশনের দিকে হাঁটা দিয়েছিল সে।
আরও পড়ুন: ম্যানহাটনে বিস্ফোরণে ধৃত ব্যক্তি বাংলাদেশি, দাবি পুলিশের
যান্ত্রিক গণ্ডগোলের জেরে গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই গাঁয়ে বাঁধা একটা পাইপ বোমা হঠাৎ ফেটে যায়। গায়ে আগুন লেগে ঘটনাস্থলেই ছটফট করতে থাকে সে। বম্ব স্কোয়াড এসে তার দেহ থেকে বিস্ফোরক খুলে নেয়। হাসপাতালে ভর্তি আততায়ী। তার কোনও শাগরেদ ছিল না বলেই দাবি পুলিশের।
দু’মাসের মধ্যে শহরে দু’টি আইএস হামলার ঘটনা ঘটল। ৩১ অক্টোবর ম্যানহাটনে আট জনকে পিষে মেরেছিল এক ২৯ বছর বয়সি এক উজবেক ট্রাক চালক। সে বার জখম হয়েছিলেন আরও ১১ জন।
আমেরিকার সব থেকে বড় বাস আড্ডা এই পোর্ট অথরিটি টার্মিনাল। প্রতিদিন এখান দিয়ে গড়ে ২ লক্ষ ৩২ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। টাইমস স্কোয়ার ও পোর্ট অথরিটি সাবওয়ে স্টেশন দিয়েও প্রতিদিন যাওয়া-আসা করেন কয়েক লক্ষ মানুষ। ঠিক মতো বিস্ফোরণ ঘটলে এখানে যে বিপুল প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হত না, মানছে পুলিশ।