Agitation in Bangladesh

অগ্নিগর্ভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধের নির্দেশ, নরমে-গরমে বার্তা দিল শেখ হাসিনার সরকার

ছাত্র-যুব আন্দোলনকে কেন্দ্র করে থমথমে পরিবেশ ঢাকা-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৩:৪৯
Share:

ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। ছবি: রয়টর্স।

অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ক্যাম্পাস খালি করতে হবে। শিক্ষার্থী এবং আবাসিকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমনই জানাচ্ছে বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’।

Advertisement

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-যুব আন্দোলনের তেজ বেড়েই চলছে বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকা-সহ সে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবারও অশান্তির রেশ বজায় রইল। এ বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলিগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালালেন আন্দোলনকারীরা। কী ভাবে এই আন্দোলনকারীদের নিরস্ত করা যায়, তা নিয়ে ভাবনায় শেখ হাসিনার সরকার। আন্দোলন দমন করতে কঠোর পদক্ষেপ করতে পিছুপা হবে না সরকার, এমনই জানাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের একাধিক প্রতিনিধি। তবে প্রয়োজনে আন্দোলনকারীরা চাইলে আলোচনাতেও বসতে রাজি সরকার।

শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগ এবং সরকারের একাধিক প্রতিনিধিকে উদ্ধৃত করে ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, দেশে চলমান আন্দোলন এখন সরকারকে গদিচ্যুত করার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনে উস্কানি দিচ্ছে। সেই কারণে আন্দোলন প্রশমিত করতে নরম হওয়ার কোনও জায়গা নেই সরকারে। কঠোর হাতে আন্দোলন রোখার কাজ শুরু হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা চাইলে আলোচনায় বসতে আগ্রহী সরকার। এমনকি, আলোচনার ব্যাপারে পদক্ষেপও শুরু করেছে সরকার। যদিও আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

Advertisement

ছাত্র-যুব আন্দোলনকে কেন্দ্র করে থমথমে পরিবেশ ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে জানাচ্ছে ‘প্রথম আলো’। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে, বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলিগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে মঙ্গলবার রাতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় ক্যাম্পাসে। অভিযোগ, ছাত্রলিগের একাধিক নেতাকে তাঁদের জন্য সংরক্ষিত ঘর থেকে বার করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকি, ভাঙচুরও চালানো হয় সেখানে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গাকে রাজনীতিমুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। চলছে সই সংগ্রহ।

প্রসঙ্গত, ২০১৮-তেও সংরক্ষণ সংস্কারের আন্দোলনে বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ সংরক্ষিত এবং ৪৪ শতাংশ সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। সেই সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে সে সময়ও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। তবে তখনকার মতো আন্দোলন থামাতে সমর্থ হয়েছিল সরকার। শুরু হয় আইনি লড়াই। সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮-র সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১-এ আদালতে যান। গত ৫ জুন আদালত রায় দেয়, হাসিনা সরকারের নির্দেশ অবৈধ। তার পরই আবারও আন্দোলনের পথে নামে ছাত্র এবং যুব সমাজের একাংশ। ইতিমধ্যেই হাসিনা সরকার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছে।

(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল বাংলাদেশে ‘সংরক্ষণ বিরোধী’ আন্দোলন হচ্ছে। আদতে বাংলাদেশে এই আন্দোলন হচ্ছে কোটা সংস্কারের দাবিতে। আমরা সেই ভ্রম সংশোধন করেছি। অনিচ্ছাকৃত ওই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement