রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। ফাইল চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে দ্বিতীয় বার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। তেমনই একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য পাকিস্তানের হয়ে তদ্বির করেছিল চিন। এ বারও আর্জি জানিয়েছে চিন। সূত্রের খবর, সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে চলেছে নিরাপত্তা পরিষদ।
জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত ১২ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি লিখেছিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। পাকিস্তানের সেই উদ্বেগকে সামনে রেখেই এ বারও নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হয়েছে চিন। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের লেখা চিঠিতে তারা জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের উদ্বেগে তারা চিন্তিত। তাদের সেই উদ্বেগের কথাই বৈঠকে তুলে ধরতে চায় চিন।
জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে গত অগস্টেও এক দফা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিল পরিষদ। ভারতকে চাপে ফেলার জন্য পাকিস্তানের হয়ে জোর সওয়াল করেছিল চিন। কিন্তু তাদের সেই ধোপে টেকেনি। পরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই এক যোগে জানিয়ে দেন, এটা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ইস্যু। দু’দেশই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিক। অন্য কোনও দেশের এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। ফলে সেই বৈঠকে কূটনৈতিক জয় হয়েছিল ভারতেরই।
৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর থেকেই জোর বিরোধিতা করছিল পাকিস্তান। জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও আন্তর্জাতিক মহলে অভিযোগ জানিয়েছিল পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, ভারত অনৈতিক ভাবে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছিল তারা। ভারতকে কোণঠাসা করতে আন্তর্জাতিক মহলে দৌড়াদৌড়ি করে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক আদালতেও বিষয়টি ওঠে। কিন্তু সব জায়গাতেই হোঁচট খেতে হয়েছে তাদের। চিন পাশে দাঁড়ালেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
৩৭০ প্রত্যাহারের পর থেকেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল জম্মু-কাশ্মীর। সেখানকার একের পর এক রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কার্ফু জারি হয়। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে যখন পাকিস্তানের সব চেষ্টা বিফলে যায়, তখন তারা জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে। উদ্বেগ প্রকাশ করে আমেরিকা-সহ আন্তর্জাতিক মহল, এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জও। কিন্তু ভারত তাদের সকলকেই আশ্বস্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।