(বাঁ দিকে) উদ্ধার করে আনা হচ্ছে দেহ । ইব্রাহিম রইসি (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
যে জায়গায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির চপার ভেঙে পড়েছিল, সেখানে উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রেড ক্রস’কে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রইসি এবং অন্য নিহত ব্যক্তিদের দেহ তাবরিজ় শহরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার পর ইরানের পূর্ব আজ়ারবাইজান প্রদেশে শেষকৃত্য হবে নিহত ব্যক্তিদের। অন্য দিকে, রইসির মৃত্যুতে মঙ্গলবার এক দিনের জন্য রাষ্ট্রীয় শোকপালনের কথা ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি।
রইসির মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকার করে নিয়ে ইরানের মন্ত্রিসভা জানিয়েছে, সরকারি কাজে কোনও ছেদ পড়বে না। সে দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খামেনেই জানিয়েছেন, দেশে পাঁচ দিন ধরে জাতীয় শোক চলবে। আপাতত ইরানের শাসনভার সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মোখবার।
রইসির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই একটি শোকবার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, এই দুঃখের সময়ে ভারত ইরানের পাশে রয়েছে। সোমবার সকালে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের একটি পোস্টে মোদী লেখেন, “ইরানের ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট রইসির বেদনাদায়ক মৃত্যুতে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। ভারত-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর পরিবার এবং ইরানের মানুষকে আমি আমার অন্তরের সমবেদনা জানাই।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর শোকবার্তায় রইসি সম্পর্কে লেখেন, “আমি চিরদিন ওই অবাক-করা মানুষটির সঙ্গে জড়িত মুহূর্তগুলোকে বাঁচিয়ে রাখব।” পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর এক্স-বার্তায় লেখেন, “ভেবেছিলাম ভাল খবর পাব। কিন্ত তা আর হল না।” শোকপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস এবং ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লাও। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রইসির মৃত্যুর পর এখনও কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি আমেরিকা এবং ইজ়রায়েল— যে দু’দেশের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক বরাবরই ‘মধুর’।
আজ়ারবাইজান সীমান্ত লাগোয়া পার্বত্য অঞ্চলে চপার ভেঙে পড়ে রইসি ছাড়াও মৃত্যু হয়েছে ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমিরাবদোল্লাহিয়ানের। রবিবারই জানা গিয়েছিল যে, পর্বতে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়েছে রইসির চপার। ওই চপারেই ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। ইরান প্রশাসনের এক শীর্ষ পদাধিকারী সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানান, একটি পার্বত্য অঞ্চল পেরিয়ে যাওয়ার সময় চপারটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। প্রবল বৃষ্টি আর ঘন কুয়াশার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে দৃশ্যমানতা খুব কম ছিল বলেও জানান ওই সরকারি আধিকারিক। সেই সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আর এক সরকারি আধিকারিক বলেছিলেন, “আমরা এখনই হাল ছাড়ছি না। তবে যেখানে চপারটি ভেঙে পড়েছে, সেই এলাকাটা আমাদের চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে।”