মিতেব বিন আবদুল্লা
একশো কোটি ডলার! এই পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি অর্থের বিনিময়ে কাল মুক্তি পেয়েছেন দুর্নীতির দায়ে ধৃত সৌদি রাজকুমার মিতেব বিন আবদুল্লা। সৌদি আরবের দুর্নীতি-বিরোধী অভিযানে যুক্ত এক কর্তা জানান, সন্তোষজনক সমঝোতা হয়েছে। তাঁর ভিত্তিতেই কাল মুক্তি পেয়েছেন রাজকুমার মিতেব।
প্রয়াত রাজা আবদুল্লার বড় ছেলে, ৬৫ বছর বয়সি এই মিতেবকেই একটা সময়ে সিংহাসনের এক সম্ভাব্য দাবিদার বলে মনে করা হতো। গত ৪ নভেম্বর দু’শোরও বেশি রাজকুমার, মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বন্দি করা হয়েছিল তাঁকে। বাকিদের সঙ্গে তিনিও গত তিন সপ্তাহ বন্দি জীবন কাটিয়েছেন পাঁচতারা হোটেল রিৎজ-কার্লটনে। সরকারি ভাবে একে দুর্নীতি-দমন আখ্যা দেওয়া হলেও মনে করা হচ্ছে, সিংহাসনে বসার আগে যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন সম্ভাব্য সব পথের কাঁটা বিদেয় করতেই এই অভিযানে নেমেছেন। যদিও যুবরাজ এই অভিযোগকে পুরোপুরি অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাবা (রাজা সলমন) যখন আমাকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন, তখন ধৃতদের অনেকেই প্রকাশ্যে আমাকে সমর্থন জানান।’’ যুবরাজের আশা, এই অভিযানের মাধ্যমে অন্তত ১০ হাজার কোটি ডলার ফিরবে রাজকোষে।
মিতেবের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে, বেআইনি ভাবে সম্পদ সংগ্রহ, নিজের সংস্থায় ভুয়ো কর্মী নিয়োগের হিসেব দেখানো, সৌদি বাহিনীর জন্য ওয়াকিটকি ও বুলেটরোধী পোশাক কেনা নিয়ে হাজার কোটি ডলারের চুক্তিতে দুর্নীতি। সব দোষ কবুল করে ও অর্থের বিনিময়ে মুক্তি পাওয়ার পরে মিতেবের পক্ষে ভবিষ্যতে বিন সলমনের বিরোধিতা করা সম্ভব হবে না। গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও তিনি ছিলেন দেশের রাজ পরিবারের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন বাহিনী ন্যাশনাল গার্ডের মন্ত্রী। এখন মুক্তি পাওয়ার পরে স্পষ্ট নয়, সত্যিই তিনি অবাধে চলাফেরা করতে পারছেন, নাকি গৃহবন্দি? সংবাদমাধ্যমকে নিজে তিনি কিছুই জানাননি এখনও। এমন জল্পনাও রয়েছে, মুক্তির জন্য ওই ১০০ কোটি ডলার নিজের পকেট থেকে দিচ্ছেন না মিতেব। ওই অঙ্কের মেয়াদি ঋণ নিচ্ছেন তিনি। যার পিছনে রয়েছে মার্কিন সহায়তা।