Mountain Expeditions

পঞ্চবার্ষিকী বাধা টপকে সুমেরুর পথে সপ্তশৃঙ্গজয়ী

বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং আগ্নেয়গিরি জয়ের রেকর্ড এখনও রয়েছে সত্যরূপের পকেটে। সুমেরু অভিযান সফল হলে সপ্তশৃঙ্গ এবং দুই মেরু ছুঁয়ে ‘এক্সপ্লোরার্স গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ খেতাব জয় করবেন তিনি।

Advertisement

স্বাতী মল্লিক

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৮
Share:

দিল্লি বিমানবন্দরে সত্য়রূপ সিদ্ধান্ত। —নিজস্ব চিত্র।

কখনও কোভিড অতিমারি, কখনও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে জের। গত পাঁচ বছরে এমনই বিভিন্ন কারণে বার বার বাতিল হয়েছে অভিযান। তবু দমানো যায়নি তাঁকে। আর তাই সব বাধা টপকে ষষ্ঠ বারের জন্য উত্তর মেরু অভিযানের পথে পা বাড়িয়েছেন সপ্তশৃঙ্গজয়ী, কলকাতার পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত।

Advertisement

বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সাত মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং আগ্নেয়গিরি জয়ের রেকর্ড এখনও রয়েছে সত্যরূপের পকেটে। সুমেরু অভিযান সফল হলে সপ্তশৃঙ্গ এবং দুই মেরু ছুঁয়ে ‘এক্সপ্লোরার্স গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ খেতাব জয় করবেন তিনি। বিশ্বে হাতে গোনা কয়েক জনের নামের পাশে এই কৃতিত্ব রয়েছে। সেই সঙ্গে ‘থ্রি পোলস চ্যালেঞ্জ’-ও জিতবেন। এভারেস্টের শীর্ষ এবং পৃথিবীর দুই মেরু ছুঁয়ে সর্বপ্রথম এই চ্যালেঞ্জ জিতেছিলেন পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারি। এ ছাড়া সপ্তশৃঙ্গ ও সপ্ত আগ্নেগিরি জয়ের সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ মেরু ছুঁয়ে এলে বছর চল্লিশের সত্যরূপই প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই বিরল কৃতিত্ব অর্জন করবেন।

২০১৯ সাল থেকে চেষ্টা করলেও বার বার অভিযান শুরুর দোরগোড়া থেকে ফিরতে হয়েছে সত্যরূপকে। ২০১৯ সালে নরওয়ে থেকে মেরু অঞ্চলে যাওয়ার উড়ান বন্ধ থাকায় প্রায় এক মাস অপেক্ষার পরে অভিযান বাতিল হয়। ২০২০-’২১ সালে অতিমারি, ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অভিযান বন্ধ থাকে। গত বছর যাত্রা শুরুর মাত্র ২ দিন আগে পরিবেশগত কারণ দেখিয়ে নরওয়ে এই অভিযানে বাধা দেয়। তাতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন অভিযাত্রীরা। যদিও পঞ্চবার্ষিকী এই ব্যর্থতা মনোবল ভাঙতে পারেনি বাঙালি যুবকের। সত্যরূপের কথায়, ‘‘২০১৫ সালে প্রথম বার এভারেস্টে গিয়েও ভূমিকম্পের জেরে সব কিছু বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হাল ছাড়িনি। পাহাড় তো বার বার এটাই শিখিয়েছে যে, ব্যর্থতা আসবে। কিন্তু তাতে ভেঙে পড়লে চলবে না।’’

Advertisement

কেমন হবে এ বারের সুমেরু অভিযান? সত্যরূপ জানাচ্ছেন, এত দিন নরওয়ে থেকে এই অভিযান হত। তবে গত বছর থেকে পরিবেশগত কারণ দেখিয়ে সেই পথ চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে নরওয়ে সরকার। তাই এ বার যাত্রা হবে রাশিয়ার পথে। রবিবার কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছেন সত্যরূপ। দিল্লি, উজ়বেকিস্তান ছুঁয়ে মঙ্গলবার সাইবেরিয়ার রাজধানী ক্রাসনোইয়ার্স্কে পৌঁছবেন। এর পরে খাটিঙ্গা হয়ে উত্তরের সর্বশেষ জনপদ বার্নিওয়ে পৌঁছনোর কথা। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে যেতে হবে ৮৯ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে। সেখান থেকেই অভিযানের শুরু। শেষ ১১১ কিলোমিটার পথ স্কি করে, কোমরে প্রায় ৫০ কেজি ওজনের স্লেজ বেঁধে পৌঁছতে হবে সুমেরুতে। মাইনাস ২০ থেকে মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই পথটুকু পেরোতে ৯-১০ দিন সময় লাগতে পারে।

শেষ ডিগ্রি পথ স্লেজ টেনে কুমেরু পৌঁছনোর অভিজ্ঞতা রয়েছে সত্যরূপের। তার থেকে অনেকটাই আলাদা এ বারের অভিযান। কী ভাবে? সত্যরূপ বলছেন, ‘‘কুমেরু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেকটাই উঁচুতে ছিল। সেখানে একটা মহাদেশের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে হয়েছিল। এ বার সমুদ্রপৃষ্ঠে ভাসমান বরফের উপর দিয়ে স্লেজ টানতে হবে। ফলে পথের দৈর্ঘ্য বেড়েও যেতে পারে। প্রবল ঠান্ডার সঙ্গে আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে জামাকাপড় ভিজে যেতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে মেরুভল্লুকের সঙ্গে মোলাকাতের আশঙ্কাও।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement