সইফ আল আডেল ছবি সংগৃহীত
কাবুলে আমেরিকান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জ়াওয়াহিরি নিহত হওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠেছে সংগঠনের সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানকে নিয়ে। পশ্চিম এশিয়া ও সন্ত্রাস-বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, দৌড়ে এগিয়ে আছেন ওসামা বিন লাদেন ও জ়াওয়াহিরির দীর্ঘদিনের সহযোগী সইফ আল আডেল।
পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, আল কায়দার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম আডেল। মিশর সেনার প্রাক্তন অফিসার আডেল ছিলেন মিশরে ইসলামিক জেহাদ গোষ্ঠীতে ওসামা ও জ়াওয়াহিরির সহযোগী। ১৯৮০-এর দশকে লাদেন-জ়াওয়াহিরির তৈরি জঙ্গি সংগঠন মক্তব অল খিদমতেরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সইফ। আফগানিস্তানে লড়েছেন সোভিয়েট বাহিনীর বিরুদ্ধে।
২০০১ সাল থেকে আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্ট’-এ রয়েছেন আডেল। তাঁর সম্পর্কে তথ্য দিলে ১ কোটি ডলার পুরস্কার দিতে রাজি আমেরিকান সরকার। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের মতে, আডেলের উপরে আমেরিকান বাহিনীর বিশেষ নজর পড়ে ১৯৯৩ সালে সোমালিয়ায় কুখ্যাত ‘ব্ল্যাক হক ডাউন’-এর ঘটনায়। ওই ঘটনায় আমেরিকার ‘ব্ল্যাক হক’ হেলিকপ্টার গুলি করে নামায় সোমালিয়ায় আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিরা। ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৮ জন আমেরিকানের। আমেরিকান গোয়েন্দাদের মতে, গোটা হামলার দায়িত্বে ছিলেন আডেল। তখন তাঁর বয়স ৩০।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শীর্ষ পদে আডেলকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যাও রয়েছে। কারণ বর্তমানে তিনি রয়েছেন ইরানে। বস্তুত ‘ব্ল্যাক হক ডাউন’-এর ঘটনার পর থেকেই তিনি ইরানে রয়েছেন বলে মত আমেরিকান গোয়েন্দাদের। সেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন বলেও দাবি তাঁদের। তাঁর নির্দেশের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে আল কায়দার তিনটি শাখা সংগঠন। তবে অন্য সূত্রের দাবি, অপহৃত এক ইরানি কূটনীতিকের বদলে আডেলকে মুক্তি দিয়েছে ইরান। তিনি এখন পাকিস্তানের ওয়াজ়িরিস্তান এলাকায় রয়েছেন। ওই সূত্রের মতে, জ়াওয়াহিরি যে ভাবে কাবুলে তালিবানের আশ্রয়ে ছিলেন, তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে তালিবান ও আল কায়দার সম্পর্ক এখনও কতটা ঘনিষ্ঠ। আবার তালিবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে পাক সেনার একাংশের। ফলে ওয়াজ়িরিস্তান থেকে আল কায়দা পরিচালনা করতে সুবিধে হতে পারে আডেলের।