—ফাইল চিত্র।
কারও একার দখলদারি নয়। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঘুরিয়ে চিনকে নিশানা করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ জানালেন, এই অঞ্চল শুধু নয়, বর্তমান দুনিয়া যেন শুধু মাত্র কয়েকটি রাষ্ট্রের মৌরসিপাট্টা না হয়ে যায়, সে দিকে নজর রাখতে হবে।
ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আজ বিদেশমন্ত্রী বলেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ধারণা ভবিষ্যৎমুখী। তাঁর কথায়, “যাঁরা ঠান্ডা যুদ্ধের যুগে পড়ে রয়েছেন, তাঁরাই এই ধারণাকে পশ্চাদমুখী ভাববেন।” গোটা অঞ্চলে চিনের পেশী প্রদর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর এই মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “অন্যান্য অনেক দেশের পাশাপাশি আমরা ইদানিং দেখছি, জার্মানি, ফ্রান্স, এবং নেদারল্যান্ডও
এই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের (উন্মুক্ত ও উদার) ধারণার সঙ্গে একমত হচ্ছে। এখন যেটা দরকার, তা হল, এই ধারণাকে বাস্তব চেহারা দেওয়া। কোয়াড-এর মতো বহুপাক্ষিক সংগঠনের মাধ্যমেই তা করা সম্ভব।”
আরও পড়ুন: ভুটানের ভিতরেই গ্রাম বানিয়েছে চিন!
আজকের এই সম্মেলনটির আলোচ্য বিষয় ছিল, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং কোভিড সঙ্কট। সূত্রের মতে, এই মঞ্চের সুযোগ নিয়ে বিদেশমন্ত্রী সমুদ্রপথে ভারতের অবস্থানকে স্পষ্ট করে তুলে ধরলেন আজ। একই সঙ্গে চিন-বিরোধী বার্তা দিলেন পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির কাছেও। সাম্প্রতিক ‘ইস্ট এশিয়া সামিট’-এ ভারত এ ব্যাপারে নিজেদের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছিল। আজ সেটিরও উল্লেখ করেছেন জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘সমুদ্র নিরাপত্তা, সমুদ্র পরিবেশবিজ্ঞান, দক্ষতা তৈরি, সামুদ্রিক সম্পদ, সমুদ্র পরিবহনের মতো সাতটি স্তম্ভের উপর ভারতের উদ্যোগ দাঁড়িয়ে রয়েছে।’’
গত এক বছর ধরে ধাপে ধাপে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে নিজেদের সুর চড়িয়েছে নয়াদিল্লি। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরোদস্তুর এক সমুদ্রযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। যার ভূকৌশলগত কেন্দ্রে অবস্থানের কারণে ভারতের উপর ঝড়ঝাপটা আসার সম্ভাবনা প্রবল। আমেরিকা এবং চিন এই দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্রকে কেন্দ্রে রেখে দু’দিকেই অক্ষ তৈরি হবে এবং হয়েছেও। কিন্তু পাশাপাশি ফ্রান্স, রাশিয়া (যারা আমেরিকার নেতৃত্ব মানতে রাজি নয়)এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিকেও পৃথক ভাবে নিজেদের সঙ্গে রাখতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুধু মাত্র কোয়াড নয়, প্রয়োজনে সমুদ্রপথে চিনের মোকাবিলার জন্য পৃথক জো।টগঠনও লক্ষ্য ভারতের। তবে কূটনীতিকদের একাংশের আশঙ্কা, অদূর ভবিষ্যতে এ’টি ভারতের কাছে লাদাখের পরে আর একটি বড় রণকৌশলগত সঙ্কটের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘চিনকে নজরে রাখতেই ফের ঢুকব হু-তে’