বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে পাকিস্তান প্রশ্নে বেসুর তৈরি হচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার আফগানিস্তান প্রসঙ্গেও দু’পক্ষের মতভেদ সামনে চলে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা নিঃশব্দেই ‘জর্জিয়া-কূটনীতি’ করে মস্কোর চোখে চোখ রাখার চেষ্টা করল নয়াদিল্লি।
গত শুক্রবার মস্কো ফেরত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নামেন পূর্ব ইউরোপের জর্জিয়ায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর জোসেফ স্তালিনের জন্মভূমি জর্জিয়ার সঙ্গে আর সুসম্পর্ক নেই মস্কোর। ২০০৮ সালে দু’দেশের মধ্যে ছোটখাটো একটি যুদ্ধও হয়ে যায়। তার পর থেকে জর্জিয়া এবং রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কেও ছেদ পড়ে।
সেই জর্জিয়ার সঙ্গে রাশিয়া সফরকে একই বন্ধনীতে রাখা মস্কোর পক্ষে অত্যন্ত অপমানজনক বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। সূত্রের খবর, জয়শঙ্কর যে সে দেশে যাবেন, তা গোড়ায় রাশিয়াকে জানানোই হয়নি! সূত্রের বক্তব্য, দিল্লির বরাবরের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই এ বছর এপ্রিলে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ভারত সফর সেরে ফেরার সময় ইসলামাবাদে নেমেছিলেন। পাশাপাশি ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়াচ্ছে রাশিয়া। জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ২২ থেকে ২৭ পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে নৌ-মহড়া চালাবে তারা। নিঃসন্দেহে এটা সাউথ ব্লকের রক্তচাপ বাড়ানোর কারণ। এ ছাড়াও তালিবানের ভূমিকা নিয়ে দ্বিমত দু’দেশ। ফলে মস্কো থেকে কার্যত খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে জয়শঙ্করকে।
তবে, জয়শঙ্করের জর্জিয়া সফরের উদ্দেশ্য বাহ্যত সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক। ধর্ম পরিবর্তন করতে না চাওয়ায় ১৬১৪ সালে খুন হন জর্জিয়ার রানী কেটেভান। পর্তুগিজদে্র হাত ঘুরে তাঁর ব্যবহৃত কিছু স্মারক ভারতে এসেছিল, যা ২০০৫ সালে গোয়ায় আবিষ্কৃত হয়। গত কয়েক বছর ধরেই তা ফেরত চাইছিল জর্জিয়া। জয়শঙ্কর গত সপ্তাহে সে দেশের হাতে সেই স্মারক তুলে দিয়েছেন।