রায়ান কোলম্যান
কাজের সঙ্গে নিয়মিত ধর্মীয় পাঠেও যোগ দিতে হবে বলে জানিয়েছিল অফিস। অস্বীকার করেন বছর ৩৪-এর যুবক। সেই কারণে চাকরি খোয়াতে হল তাঁকে। আমেরিকার ওরেগনের ঘটনা। সংস্থার বিরুদ্ধে ৮ লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন রায়ান কোলম্যান নামে ওই যুবক।
স্থানীয় এক দৈনিককে কোলম্যান জানিয়েছেন, সংস্থার মালিক জোয়েল ডালকে তিনি একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, তিনি ভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী। কিন্তু ডাল তাতে বলেছিলেন, চাকরি রাখতে হলে, রোজ ওই ধর্মীয় পাঠে যোগ দিতে হবে। কথা না মানলে, অন্যত্র কাজ খুঁজে নিতে হবে।
কোলম্যান জানান, শুরুর দিকে তিনি সাপ্তাহিক ক্লাসে যোগ দেন। এক ঘণ্টারও বেশি চলত ধর্মচর্চা। ভাল না লাগলেও ভয়ে মেনে নিয়েছিলেন বিষয়টা। কিন্তু এক সময় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। গত এপ্রিল মাসে ডালকে ফোন করে কোলম্যান জানিয়েছিলেন, ওই ধর্মপাঠে যোগ না দেওয়ার অধিকারও তাঁর রয়েছে। তার পরেই তাঁকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়।
ডালের আইনজীবী কেন্ট হিকাম জানান, তাঁর মক্কেল ‘সেকেন্ড-চান্স এমপ্লয়ার’। মাদক বা মদের নেশায় কিংবা ছোটখাটো অপরাধে জড়িয়ে জীবনের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া লোকেদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করেন। কোলম্যানও এক জন জেল ফেরত অপরাধী। সন্তানদের দেখাশোনায় অবহেলা ও মাদক বিক্রিতে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। সম্প্রতি ১০ ও ১৪ বছরের দুই সন্তানকে হেফাজতে পেয়েছেন কোলম্যান। কিন্তু তা বলে কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বাধ্যতামূলক হবে কেন? আর না মানলে চাকরিই বা যাবে কেন? জবাবে স্থানীয় দৈনিককে হিকাম বলেন, ‘‘ধর্মপাঠ প্রয়োজনীয়।’’ তাঁর জবাবে শোরগোল পড়তেই অন্য এক সংবাদপত্রকে হিকাম বলেন, ‘‘প্রতিদিন নয়, সাপ্তাহিক পাঠ। তাতে যোগ দিলে ওই এক ঘণ্টায় অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হয়। অংশ না নিলে, অর্থ মেলে না।’’ কিন্তু বাধ্যতামূলক কি না, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যান হিকাম।
ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ডেবরা উইডিস জানান, আমেরিকার ফেডারেল আইন অনুযায়ী, কোনও সংস্থা, কোনও ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য তাঁকে চাকরিতে বহাল করতে পারে না, চাকরি থেকে বহিষ্কারও করতে পারে না। কোলম্যান এ দিন বলেন, ‘‘মামলায় আমিই জিতব। আমার মামলাই দেখাবে, নিজের ধর্মবিশ্বাস মেনে চলার অধিকার সকলের আছে। তা সে আল্লা হোক, কিংবা বুদ্ধ...।’’