কিভের হাসপাতালের প্রকাশিত সেই ছবি। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
এই ছবিটি হতে পারে মাতৃত্বের শাশ্বত প্রতীক। কিংবা, কোনও বর্ণনা না দিলেও এই ছবিটি হতে পারে আস্ত একটি ‘সংবাদ’। ইউক্রেনের রাজধানী কিভে প্রতিদিন যে ভাবে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, মানবতার উপর আঘাত আসছে বারংবার, তার মধ্যে থেকে উঠে আসছে এমন অজস্র ছবি। যে ছবি দেখে দু’দণ্ড থমকে যেতে হয়। নিজের শরীরে অসংখ্য আঘাত। কারণ একরত্তিকে বাঁচাতে নিজের শরীর দিয়েই রুশ বোমা থেকে সন্তানকে আড়াল করেছেন মা। যুদ্ধবিধ্বস্ত কিভের সেই ছবি প্রকাশ্যে এনেছে ইউক্রেনের একটি হাসপাতাল।
রুশ বাহিনীর লাগাতার বোমা বৃষ্টির মধ্যেও এক মাসের শিশুর গায়ে একটি আঁচড় লাগেনি। কারণ বর্মের মতো তার মায়ের শরীর ঘিরে রেখেছিল তাকে। কিভের এক সরকারি শিশু হাসপাতাল ফেসবুক পোস্টে ঘটনাটির কথা জানিয়েছে। ফেসবুকেই হাসপাতালটি এ-ও জানিয়েছে যে, শিশুটি অক্ষত হলেও বোমার আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন তার মা।
শনিবার ভোর রাতে যখন ঘটনাটি ঘটে, তখন সদ্যোজাত শিশুটিকে খাওয়াচ্ছিলেন তার মা। বাবাও ছিলেন বাড়িতে। গোটারাত রুশ যুদ্ধ বিমানের বোমা ফেলার আওয়াজে কাঁটা হয়েছিলেন দু’জনেই। আচমকাই তাঁদের বাড়ির উপরেও বোমা এসে পড়ে।
শিশুর বাবা বলেছেন, ‘‘রাতে যখন বোমার আওয়াজ ক্রমশ এগিয়ে আসছে, আমি আমাদের উঠোনে বেরিয়েছিলাম। চোখের সামনেই বোমা পড়তে দেখি বাড়ির পাশের শিশুদের স্কুলে। স্কুলবাড়িটা তো বটেই, আশপাশের কোনও বাড়িরই ছাদ ছিল না। জানলা দরজাও উপড়ে বেরিয়ে এসেছিল। চোখের সামনেই একঝাঁক কাচের টুকরো উড়ে আসতে দেখি।’’ এর পরই বুকে সন্তানকে নিয়ে দৌড় লাগান মা। কিভের ওই হাসপাতাল জানিয়েছে, শিশুটির বাবার পায়েও আঘাত লেগেছিল। তাঁর চিকিৎসা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পরিবারটির একটি ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে শিশুটিকে স্তন্যপান করাচ্ছেন জখম মা। তাঁর মাথায় বড় ব্যান্ডেজ। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁর স্বামী।