সামনাসামনি: জিম্বাবোয়ে ওপেন ইউনিভার্সিটির বার্ষিক সমাবর্তনে প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। শুক্রবার। ছবি: এএফপি।
অবশেষে দেখা মিলল রবার্ট মুগাবের। সেনা অভ্যুত্থানের দু’দিন পরে আজই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্ট। তবে রাজনৈতিক ছোঁয়াচ এড়িয়েই। সেনার হাতে দেশের ক্ষমতা তুলে দেওয়া নিয়ে যে তাঁর আপত্তি আছে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছিল কাল। মুগাবে আজও তাতেই অনড় থাকলেন।
জিম্বাবোয়ে ওপেন ইউনির্ভাসিটির বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠান ছিল আজ। প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের কার্ডে আগে থেকেই নাম ছাপানো ছিল প্রেসিডেন্ট মুগাবের। কিন্তু তিনি তো গৃহবন্দি! আসবেন কী করে? তবু তিনি এলেন। নীল-হলুদ গাউন, আর মাথায় চওড়া হ্যাট চাপিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এলেন ‘মুক্ত’ মুগাবে। লাল গালিচায় মোড়া সিঁড়ি বেয়ে গটগটিয়ে মঞ্চে উঠলেন ৯৩ বছরের প্রেসিডেন্ট। দু’-চার কথা বললেন বটে, কিন্তু ক্ষমতায় থাকা নিয়ে বাড়তি আর একটি কথাও নয়।
তবু জিম্বাবোয়ে আজ দিনভর মুগাবের ভবিষ্যৎ আলোচনাতেই উত্তাল হয়ে রইল। দেশে ভোট আগামী বছর। কিন্তু তত দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় নারাজ জিম্বাবোয়ের সেনাবাহিনী। দফায় দফায় এ নিয়ে মুগাবের সঙ্গে তাদের কথা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনা। একই রকম ভাবে মুগাবের ইস্তফার দাবিতে অনড় তাঁর নিজের দলও। ক্ষমতাসীন জ্যানু-পিএফ দলের তরফে আজও একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘উনি (মুগাবে) না চাইলেও রবিবারের মধ্যেই ক্ষমতাচ্যুত করা হবে প্রেসিডেন্টকে। আর মঙ্গলবার ইমপিচমেন্ট। দেশের বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে পিছু হঠার কোনও প্রশ্নই উঠছে না।’’
১০০ বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান বলে নিজেই একটা সময় ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মুগাবে। কিন্তু দেশ-বিদেশেরও কূটনীতিকেরাও তাঁর পক্ষে বিশেষ আশার আলো দেখছেন না। কার্যত হাত-পা বাঁধা অবস্থা এখন মুগাবের। বাড়ির বাইরে ওত পেতে বসে রয়েছে সেনা। ফার্স্ট লেডি এখনও গৃহবন্দি।
‘একনায়ক’ মুগাবের আমলে ইদানীং দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি যে ভাবে খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে, সেই অভিযোগে সরব দেশের নেটিজেনরাও। এক জন তো বলেই দিলেন, ‘‘ঢের হয়েছে। এ বার মুগাবেকে রাস্তায় টেনে এনে জনতার আদালতে দাঁড় করানো হোক। দর কষাকষি যা-করার, সব আমরাই করবো।’’