Rjukan

পাহাড়ের উপর ৫০ ফুটের তিনটি বিশাল আয়না রয়েছে এই শহরে, কেন জানেন?

আয়না দিয়েই সূর্যের আলো প্রবেশ করছে এখানে

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
অসলো শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:১৫
Share:
০১ ১৩

নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে প্রায় একশো মাইল পশ্চিমে অবস্থিত পাহাড়ি এক ছোট্ট শহর জুকন। উঁচু পাহাড়ের বাধা টপকে সূর্যের আলো প্রায় পৌঁছয়ই না সেখানে। প্রায় গোটা শীতকালটাই অন্ধকারে ডুবে থাকত এই গ্রাম। আর শীতকালে রোদ না আসা মানে সে এক ভয়াবহ অবস্থা।

০২ ১৩

এমনিতেই প্রাকৃতিক অবস্থানের জন্য গোটা দেশেই সূর্যের আলো কম ঢোকে। উপত্যকা-শহর জুকনের আবার চার দিক পাহাড়ে ঘেরা। ফলে শীতকালে যেটুকু আলো বরাদ্দ ছিল, বিশাল বিশাল পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে তা আটকে যেত পাহাড়ের শীর্ষেই।

Advertisement
০৩ ১৩

শীতকালে আলোর সন্ধান পেতে কেব্‌ল কারে করে পর্বতে চড়তে হত বাসিন্দাদের। আর ভাবনাটা সেখানেই।

০৪ ১৩

মার্টিন অ্যান্ডারসন নামে এক ব্যক্তি বছর দশেক আগে বললেন এক পুরনো ভাবনার কথা। আলো মাখতে পাহাড়ে না চড়ে যদি আলোকেই নিজেদের দিকে ঘোরানো যায়? যদি কোনও ভাবে সূর্যের আলোকেই প্রতিফলিত করা যায় জুকনের দিকে?

০৫ ১৩

পর্বতঘেরা জনশূন্য উপত্যকায় যখন প্রথম জুকন শহরটি তৈরি করেন নরওয়ের ব্যবসায়ী স্যাম আইদ, তখন থেকেই তিনি চেষ্টা করেছিলেন, প্রতিফলনের বিজ্ঞানের ফায়দা তোলার। কিন্তু সে সময়ে গোটা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রযুক্তি তৈরি ছিল না। মার্টিন সেই ভাবনাকেই বাস্তবায়িত করলেন বলা যেতে পারে।

০৬ ১৩

নিজের হাতে স্যাম তৈরি করেন গোটা শহর। জলপ্রপাতের শক্তি থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করে সার উৎপাদন করে বাইরের দুনিয়ায় পৌঁছে দিতেন এই ব্যবসায়ী। জনমানবহীন উপত্যকা দুনিয়ার কাছে জুকন পরিচিতি পায় সেই সময়েই। তবে আলো-আঁধারি থেকে মুক্তির বন্দোবস্ত অবশ্য করে যেতে পারেননি তিনি। তা করলেন মার্টিন।

০৭ ১৩

মার্টিনের ভাবনাতেই উঁচু পাহাড়ের বাধা টপকে শীতকালেও জুকন পেল সূর্যের আলো। তবে সরাসরি নয়, প্রতিফলিত হয়ে। সে জন্য প্রায় ১৫ মিটার বা ৫০ ফুট দীর্ঘ তিনটি আয়না তৈরি করা হল। হেলিকপ্টারে করে সেগুলিকে বসানো হল জুকন-সংলগ্ন পর্বতের গায়ে। ২০১৩ সালের অক্টোবরের শেষেই চালু হয় এই প্রক্রিয়া।

০৮ ১৩

‘উদ্ভট’ এই ভাবনার সঙ্গী জোটেনি প্রথম দিকে। প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রতি পদে। হাল ছাড়েননি মার্টিন অ্যান্ডারসন। ৪০০ মিটার উঁচু পাহাড় চুড়োয় স্বপ্নের আয়না বসিয়েই ছেড়েছেন। সূর্য যে দিকে ঢলবে, ১০ সেকেন্ড অন্তর শার্সিগুলিও বেঁকে যাচ্ছে সেই অনুযায়ী। আর পুরো প্রক্রিয়াটা নিয়ন্ত্রণ করছে কম্পিউটার।

০৯ ১৩

মার্টিনের উদ্দেশ্য ছিল একটাই। ওই উচ্চতায় শীতকালে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত যত টুকু সূর্যের আলো আসে, তা যেন আয়নাগুলিতে প্রতিফলিত হয়ে জুকনে এসে পৌঁছয়। শীতকালেও যেন সূর্যের উষ্ণতায় ঝকঝক করে ওঠে জুকন।

১০ ১৩

আর এই জায়ান্ট মিরর বসানোর পরে এই শহরের নেমেছে পর্যটকদের ঢল। শুধু একটু রোদ্দুরের জন্য এরকম উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষ থেকে পর্যটকদের মধ্যেও।

১১ ১৩

মনোবিদদের দাবি, গা-হাত-পা আলোয় সেঁকাই কেবল নয়, মনের জন্যও দরকার হয় উষ্ণতার ছোঁয়া। নিকষ কালো অন্ধকারের সঙ্গে মন খারাপের সম্পর্ক মেনে নেন মনস্তত্ত্ববিদেরাও। তাই আয়না বসিয়ে আলো আসায় এই শহরের মানুষদের মনমেজাজও এখন আগের থেকে নাকি অনেক বেশি ভাল।

১২ ১৩

আয়না বসিয়ে প্রায় এই শহরে যে রোদ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে৷ তার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা৷

১৩ ১৩

আমেরিকার অ্যারিজোনাতে প্রতিফলক কাচ ব্যবহার করে সূর্যের আলোর সাহায্যে ঘাস গজানোর পদ্ধতির কথা জেনেই নাকি আরও বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন মার্টিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement