ঋষি সুনক। — ফাইল চিত্র।
জল্পনার অবসান। আগামী ৪ জুলাই ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। বুধবার এ কথা ঘোষণা করল প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের দফতর। ২০২২ সালের অক্টোবরে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল কনজ়ারভেটিভের এমপিরা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এই প্রথম সাধারণ নির্বাচনের মুখে পড়তে হচ্ছে সুনককে।
মনে করা হচ্ছে, লড়াইটা মোটেও সহজ হবে না সুনকের কাছে।
২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে ব্রিটেনে। যদিও ব্রেক্সিটের ক্ষত এখনও ভোলেননি ব্রিটেনবাসী। এই নির্বাচনেও তার পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। অভিযোগ, সুনকের আমলে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে লাগামছাড়া ভাবে। ২০২২ সালের শেষে সে দেশে মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছিল ১১ শতাংশে, যা নজির তৈরি করেছিল। মার্চে তা অনেকটাই কমে যায়। সে দেশের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট জানান, তাঁদের সরকারের পরিকল্পনা কাজে দিয়েছে। যদিও তাতে দেশবাসীর অসন্তোষ খুব একটা কমেনি। পাশাপাশি, কোভিড পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনের পরিস্থিতিও হতাশ করেছে দেশবাসীকে। একটা অংশের মতে, সুনকের পূর্বসূরিও ‘কালো ছায়া’ ফেলতে পারেন তাঁর ভবিষ্যতে। মাত্র ৪৯ দিন ক্ষমতায় ছিলেন লিজ ট্রাস। কিন্তু সে সময় তাঁর রাজস্ব সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বিপাকে ফেলে ব্রিটেনের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে। পড়ে যায় পাউন্ডের দাম। তার পর সেই পরিস্থিতি মেরামতের যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন সুনক। তবে সফল কতটা হয়েছেন, তা বলবে সময়।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা বার বার ভোটের দিন ঘোষণার দাবি তোলেন। নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ব্রিটেনে ভোট করাতে হবে। সুনক বলেছিলেন, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে হবে ভোট। বুধবার সুনকের দফতরের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রের প্রধান রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘রাজা এই আর্জি মেনে নিয়েছেন। ৪ জুলাই ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। এখন ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সময় এসেছে ব্রিটেনে।’’
ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আসন্ন নির্বাচনে বড় ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সুনকের। সরকার গড়তে পারে লেবার পার্টি। স্থানীয় নির্বাচনে ইতিমধ্যেই বড় ধাক্কা খেয়েছে সুনকের দল। ২৬ শতাংশের বেশি ভোট এ বার গিয়েছে লেবার পার্টির দখলে। ব্ল্যাকপুল সাউথের পার্লামেন্টের আসনটি ফিরে পায় লেবার পার্টি। ফলে পার্লামেন্টে একটি আসন হারিয়েছে সুনকদের দল। রেডিচ, থাররক, হার্টলেপুল, রাশমুরের মতো কেন্দ্রেও স্থানীয় ভোটে জয় পান লেবার প্রার্থীরা। শুধু ওল্ডহ্যামে জয় পায়নি লেবার পার্টি। সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায় গাজ়া নিয়ে লেবার পার্টির অবস্থানে আদৌ সন্তুষ্ট নন। তাঁদের মতে, গাজ়ায় যুদ্ধ-বিরতির কথা ভাবেনি লেবার পার্টি। এই আবহে বুধবার ভোটের দিন ঘোষণা করলেন সুনক।