ফাইল চিত্র
ধাপে ধাপে করোনা-বিধি শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্রিটেন। বলা হচ্ছিল ‘স্বাধীনতার রোডম্যাপ’। গত কয়েক মাস ধরে তাই পরিকল্পনামাফিক একটু একটু করে নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। ঠিক ছিল, ২১ জুন সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু ডেল্টা স্ট্রেনের বাড়বাড়ন্তে এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হল ‘স্বাধীনতা উদ্যাপন’। যদিও বাকি ইউরোপ নির্ভীক।
ফ্রান্সে যেমন সংক্রমণ কমতেই রাতের কার্ফু তুলে দেওয়া হয়েছে। কাফে, রেস্তরাঁর ভিতরে বসে খাওয়া যাচ্ছে। তবে স্বাভাবিক সময়ে যে সংখ্যক লোক একসঙ্গে বসতে পারতেন, সংখ্যাটা তার অর্ধেক করা হয়েছে। অতিপ্রয়োজনীয় নয়, এমন দোকানও খুলে দেওয়া হয়েছে। এমনকি জিম, সিনেমা হল সব। তবে মাস্ক পরা এখনও (৩০ জুন পর্যন্ত) বাধ্যতামূলক। জার্মানিতে সেই পাঠও চুকেছে। বার্লিনের মতো শহরাঞ্চলেও মাস্ক পরতে হচ্ছে না কাউকে। তবে ১৬টি প্রদেশের প্রতিটিতে আঞ্চলিক প্রশাসন নিজেদের মতো নিয়ম জারি করেছে। যাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও কড়াকড়িই নেই। তবে জমায়েতের ক্ষেত্রে নিয়ম, তিনটি পরিবারের সর্বোচ্চ ছ’জন এক জায়গায় জড়ো হতে পারেন। ইটালি, স্পেনও স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টায়। তবে ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না কোথাওই।
করোনা-বিধির প্রতিবাদে প্যারিসে কাল একটি স্ট্রিট পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। আমেরিকান ফিল্মের নামে প্রতিবাদের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘প্রোজেক্ট এক্স’। কয়েকশো মাস্কহীন লোক সেখানে জড়ো হন। তাঁরা পুলিশের ভ্যান লক্ষ্য করে ভাঙা বোতল ছোড়েন। গাড়ি ভাঙচুর করেন। শেষে পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে। লুভর মিউজ়িয়ামের কাছে সেন নদীর তীরে অন্য একটি জমায়েত হয়েছিল। সেটি অবশ্য কোনও প্রতিবাদ নয়। মধ্যরাতে সেই পার্টিও ভেঙে দেয় পুলিশ। শহরের পাবগুলিও খুলে দেওয়া হয়েছে। অল্পবয়সিদের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। প্রশাসনিক কর্তারাও বলছেন, ‘‘জানি দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা কষ্টকর। কিন্তু ভাইরাস এখনও যায়নি।’’
সম্প্রতি একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ শাখার প্রধান মাইক রায়ানের মুখে। তাঁর কথায়, ‘‘যে ভাবে ফিল্ম ফেস্টিভাল, স্পোর্টস টুর্নামেন্ট চলছে, মহাদেশের এক প্রান্ত থেকে লোক অন্য প্রান্তে যাচ্ছেন, তাতে বিপদ আসন্ন।’’ আজ, রবিবার ফরাসি ওপেনের শেষ। সামনের মাসেই উইম্বলডন। ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ চলছে। এই সবই যে ভয়ের কারণ হওয়ার যথেষ্ট, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন রায়ান।