অনুষ্ঠান বা ডিস্কোতে আস্তে চলা মিউজিকেই (কম কম্পাঙ্ক যুক্ত শব্দ) লোকজন বেশি নাচানাচি করেন, বলছে গবেষণা। ছবি: প্রতীকী
ডিস্কোতে গেলেন একটু আমোদের জন্য। গাঁক গাঁক করে গান বাজছে। হঠাৎই কমল শব্দ। আস্তে হয়ে গেল গান। নাচ কিন্তু থামল না। নাচের গতি হয়তো ধীর হল। চলন কমল না। বরং তা বাড়ল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাচ থামার কথাও নয়। কারণ তাঁরা গবেষণা করে দেখেছেন, অনুষ্ঠান বা ডিস্কোতে আস্তে চলা মিউজিকেই (কম কম্পাঙ্ক যুক্ত শব্দ) লোকজন বেশি নাচানাচি করেন।
গবেষকরা দেখেছেন, কোনও লাইভ সঙ্গীতানুষ্ঠানে যখন কম কম্পাঙ্কযুক্ত শব্দ (ভেরি লো ফ্রিকোয়েন্সি) চালানো হয়, তখন শ্রোতারা অনেক বেশি নাচানাচি করেন। কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ু বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল ক্যামেরন এই নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইলেক্ট্রনিক মিউজিক ডান্স কনসার্টে কম কম্পাঙ্ক যুক্ত শব্দ অর্থাৎ আস্তে মিউজিকেই লোক জন বেশি নাচেন। এটা করেন নিজের অজান্তেই।’’
ক্যামেরন এই গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছন, তাঁর পূর্বসূরিরাও এই বিষয়ে প্রায় একমত। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ডিস্কে গিয়ে কম কম্পাঙ্ক যুক্ত শব্দেই লোকজন বেশি নাচানাচি করেন। তবে গবেষকরা একটা বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি যে, ডিস্ক বা মিউজিক কনসার্টের বাইরেও কি লোকজন আস্তে চলা মিউজিকে এ ভাবেই গা দোলাবেন!
কানাডায় একটি ইলেক্ট্রিক মিউজিক কনসার্টে গিয়ে এই নিয়ে পরীক্ষা চালান ক্যামেরনরা। উপস্থিত লোকজনকে কানে হেডব্যান্ড লাগাতে বলেন। মোট ৫৫ মিনিট ধরে চলেছিল কনসার্টটি। সেখানে প্রতি আড়াই মিনিট অন্তর কম কম্পাঙ্কযুক্ত মিউজিক চালিয়ে দেওয়া হয়। ওই কনসার্টে ৪৩ জন কানে হেডব্যান্ড লাগাতে রাজি হন। দেখা যায়, যখনই কম কম্পাঙ্কযুক্ত মিউজিক চালানো হয়, তখন তাঁরা স্বাভাবিকের থেকে ১১.৮ শতাংশ বেশি গা দুলিয়ে নাচানাচি করছেন তাঁরা।
কনসার্টে উপস্থিত ৫১ জনকে জানাতে বলা হয় যে, কম কম্পাঙ্কযুক্ত মিউজিক চালানোর সময় তাঁরা কি আদৌ শরীরে বেশি দুলুনি অনুভব করেছিলেন? তার জেরেই কি বেশি নাচানাচি করেছিলেন? জবাবে শ্রোতারা জানিয়েছেন, অন্য কনসার্টে, যেখানে কম কম্পাঙ্কযুক্ত মিউজিক চালানো হয় না, সেখানে যেমন অনুভূতি হয় তাঁদের, এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। কম কম্পাঙ্কযুক্ত মিউজিকের প্রভাব মস্তিষ্কের উপর কীভাবে পড়ে, তা নিয়ে পরবর্তী কালে আরও গবেষণা করতে চান ক্যামেরনরা।