India-US Tariff War

‘ওরা ১০০ শতাংশ কর নেয়’! ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপানোর ঘোষণা ট্রাম্পের, জানিয়ে দিলেন তারিখও

দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বুধবারই প্রথম মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা করলেন ট্রাম্প। সেই মঞ্চ থেকেই ভারতের উপর পাল্টা আমদানি শুল্ক আদায়ের কথা ঘোষণা করেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫ ১০:০৪
Share:
Reciprocal tariffs against India, China to kick in on April 2, says Donald Trump

বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তৃতা। ছবি: রয়টার্স।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির কোপ থেকে বাদ পড়ল না ভারত! বুধবার সকালে (ভারতীয় সময়) আমেরিকার কংগ্রেসে যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা করার সময় সে দেশের প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর নীতি থেকে বাদ পড়ছে না ভারত। পাল্টা শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করে দিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, কবে থেকে আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক চাপানো হবে, সেই তারিখও জানিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারত ছাড়াও চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, মেক্সিকোর মতো দেশগুলির উপর পাল্টা শুল্ক চাপানোর কথা বললেন তিনি।

Advertisement

দ্বিতীয় বার আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বুধবারই প্রথম মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা করলেন ট্রাম্প। সেই বক্তৃতায় তিনি কোন কোন বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন, সেই দিকে নজর ছিল সকলেরই। সেই মঞ্চে ট্রাম্প বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন দেশ আমাদের উপর শুল্ক চাপিয়ে আসছে, এ বার আমাদের পালা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিন, ব্রাজিল, ভারত এবং আরও অসংখ্য দেশ আমাদের উপর যত বেশি শুল্ক আরোপ করে, আমরাও তত শুল্ক আরোপ করব।’’ তার পরই ট্রাম্প আলাদা করে ভারতের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারত আমাদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এই ব্যবস্থা আমেরিকার প্রতি ন্যায্য নয়, কখনওই ছিল না।’’

ট্রাম্পের ঘোষণা, ‘‘আমরা আগামী ২ এপ্রিল থেকে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করব। আমি চেয়েছিলাম ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে। কিন্তু অনেকে ভাবতে পারেন, আমি এপ্রিল ফুল করছি। তাই ২ এপ্রিল থেকে পারস্পরিক শুল্ক চালু করব।’’

Advertisement

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্পের একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিশ্ব দরবারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছিলেন, আমদানি শুল্কের বিষয়ে তিনি কখনওই নমনীয় হবেন না। ‘টিট ফর ট্যাট’ নীতি অনুসরণ করার কথা জানান ট্রাম্প। তাঁর দাবি ছিল, যে দেশ মার্কিন পণ্যের উপর যত বেশি শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও সেই সব দেশের পণ্যের উপর তত পরিমাণ আমদানি শুল্ক বসাবে। সেই ঘোষণায় যে তিনি এখনও অনড় তা আরও এক বার স্পষ্ট করে দিলেন ট্রাম্প। তাঁর সংযোজন, ‘‘কেউ যদি শুল্কের বদলে অন্য কোনও বাধার সৃষ্টি করে, তবে আমরাও তাঁদের জন্য সেই কাজই করব।’’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের সময়ও একই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। মোদীর সঙ্গে বৈঠকেও শুল্ক বিষয়টি উঠেছিল বলে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নতি চায় আমেরিকা। কিন্তু তা শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে নয়! মোদীর সঙ্গে হোয়াইট হাউসের বৈঠকে যে তিনি আমেরিকার শুল্কনীতি সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, সে কথাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। বলেন, ‘‘তিনি এখানে এসেছিলেন। আমি বলেছি, আপনি শুল্ক ধার্য করুন বা না-করুন, আমি করবই।’’ সেই কথাই রাখলেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের শুল্ক-হুঁশিয়ারির পরই তৎপর হয় মোদী সরকার। বাজেটে আমেরিকা থেকে আমদানি করা হুইস্কি থেকে মোটরবাইকের মতো একগুচ্ছ পণ্যে মোদী সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করে ভারতের বাজার আমেরিকার পণ্যের জন্য আরও খুলে দেওয়ার বিষয়েও নীতিগত ভাবে সম্মত হয়েছে মোদী সরকার। শুধু তা-ই নয়, ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল রবিবার রাতেই আমেরিকায় পাড়ি দেন। সূত্রের খবর, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে শুল্কনীতি নিয়ে কথা বলতেই তাঁর এই মার্কিন সফর। তবে তার মাঝেই বুধবার পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর কথা জানিয়ে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement