Conflict In Myanmar

মায়ানমার সেনার অস্ত্রাগার দখল করল বিদ্রোহীরা! ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে রাজধানী দখলের বার্তা!

উত্তর মায়ানমারে তুমুল যুদ্ধের পরে বিদ্রোহী বাহিনী মঙ্গলবার নামতু নদীর উত্তরে হেসেনভি শহর ও সেনাঘাঁটি দখল করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নেপিদ শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৪
Share:

অশান্ত মায়ানমার। ছবি: রয়টার্স।

হাফডজন শহর, কয়েকশো গ্রাম এবং পুলিশ ও সেনার শতাধিক শিবিরের পর এ বার মায়ানমার ফৌজের একটি অস্ত্রাগারের দখল নিল বিদ্রোহী বাহিনী। শান প্রদেশের ওই অস্ত্রাগার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং বিস্ফোরকের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের যৌথ বাহিনী অন্তত ছ’টি ট্যাঙ্ক এবং বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া গাড়িও তাদের দখলে এনেছে।

Advertisement

উত্তর মায়ানমারে তুমুল যুদ্ধের পরে বিদ্রোহী বাহিনী মঙ্গলবার নামতু নদীর উত্তরে হেসেনভি শহর ও সেনাঘাঁটি দখল করেছে। মায়ানমার সেনা পিছু হটে নদীর দক্ষিণে অবস্থান নিয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। বস্তুত, উত্তর মায়ানমারে কুনলং, মনিক্যাট, নানবেং (লাশিও-টাংইয়ান রোডে) এবং মোনেকো ছাড়া সীমান্তবর্তী অন্য কোনও সেনাঘাঁটি এখন সামরিক জু্ন্টা সরকারের দখলে নেই। মঙ্গলবার বিদ্রোহী জোট জানিয়েছে, তারা রাজধানী ইয়ঙ্গন থেকেও জুন্টা সরকারকে উৎখাত করবে।

শান এবং সাগিয়াং প্রদেশে সাফল্যের পরে পশ্চিমের চিন প্রদেশেও হামলা শুরু করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে, পশ্চিম মায়ানমারে সক্রিয় দুই বিদ্রোহী বাহিনী ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’।

Advertisement

মিজ়োরামের চাম্পেই জেলা লাগোয়া সীমান্তের অদূরে মায়ানমার সেনার রিখাওদর এবং খাওমাওয়ি ছাউনি দু’টি সোমবার সন্ধ্যায় বিদ্রোহী বাহিনী দখল করে। প্রাণভয়ে ৪২ জন মায়ানমার সেনা জ়োকাওথান সীমান্ত চেকপোস্ট পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে আত্মসমর্পণ করেছেন। মিজ়োরাম পুলিশের আইজি লালবিয়াকথাঙ্গা খিয়াংটে মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সীমান্তবর্তী একাধিক গ্রামেরও দখল নিয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী। তাই মায়ানমারের প্রায় ৫,০০০ গ্রামবাসী আতঙ্কে ভারতে চলে এসেছেন। আত্মসমর্পণকারী সেনাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

মিজ়োরাম পুলিশ সূত্রের খবর, গুলিতে জখম কয়েক জন গ্রামবাসীকে চাম্পেই জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যুও হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর বিধানসভার ভোটপর্ব মিটলেও এখনও ভোটগণনা হয়নি মিজ়োরামে এই পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর আগমনে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন। মিজ়োরাম ছাড়াও উত্তর-পূর্বের অরুণাচল প্রদেশ এবং হিংসাদীর্ণ মণিপুরের সঙ্গেও মায়ানমারের স্থলসীমান্ত রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকার নজরদারিতে নিযুক্ত বিএসএফ এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম মায়ানমারের শান এবং সাগিয়াং প্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিদ্রোহীদের দখলে গিয়েছে। মায়ানমার-চিন সংযোগরক্ষাকারী প্রধান সড়কও বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছে। গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে মায়ানমারের লক্ষাধিক মানুষ ইতিমধ্যেই ঘরছাড়া হয়েছেন বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement