ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
মহিলা ও শিশুকন্যাদের ধর্ষণের ঘটনা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় কঠোরতর আইন আনছে পাকিস্তান। দাগি ধর্ষকদের সাজা দিতে এ বার রাসায়নিক পদ্ধতিতে পুরুষত্বহীন করার সংস্থান রাখা হয়েছে নয়া পাক আইনে। গত কাল পাক পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে এই সংক্রান্ত বিলটি পাশ হয়েছে।
সমীক্ষা বলে, পাকিস্তানে যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের যত অভিযোগ দায়ের হয়, তার মধ্যে মাত্র চার শতাংশ ক্ষেত্রে সাজা নিশ্চিত করা যায়। অথচ লাগামছাড়া ভাবেই এ দেশে বেড়ে চলেছে ধর্ষণ। বছর দুয়েক আগেই কাসুর শহরের বাসিন্দা, সাত বছরের এক শিশুকন্যার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘিরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল পাকিস্তানে। এ দেশে শিশুকে ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। ফলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাপ বাড়ছিল পাক প্রশাসনের উপরে।
বছরখানেক আগে পাক মন্ত্রিসভার আনা একটি অর্ডিন্যান্সে সম্মতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। তাতে ধর্ষণকারীকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে পুরুষত্বহীন করার পাশাপাশি ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচারের জন্য বিশেষ আদালত গঠনের কথা বলা হয়েছিল। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়ে দিয়েছিলেন, দাগি ধর্ষকদের ক্ষেত্রে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় লিঙ্গচ্ছেদের সাজায় তাঁর সম্মতি রয়েছে। গত কাল পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে আরও ৩৩টি বিলের সঙ্গেই পাশ হয় অপরাধমূলক আইন (সংশোধনী) বিলটি। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জারি করা বিধি অনুসারে এই প্রক্রিয়া কার্যকর করা হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপরে ওষুধ প্রয়োগ করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জীবনের যে কোনও সময়ের জন্য তাকে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অক্ষম করে দেওয়া হবে। বিধি দ্বারা স্থাপিত চিকিৎসকদের বোর্ড এই কাজটি করবে।’’ এর পাশাপাশি আনা আরও একটি বিলে ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচারের জন্য বিশেষ আদালত গঠন ও তদন্তে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র এবং আমেরিকার কোনও কোনও প্রদেশে ধর্ষণের সাজা হিসেবে রাসায়নিক পদ্ধতিতে অপরাধীকে পুরষত্বহীন করার সংস্থান রয়েছে। তবে পাকিস্তানের জামাত-ই-ইসলামির সেনেটর মুস্তাক আহমেদ এই বিলটিকে ইসলাম ও শরিয়া-বিরোধী বলে দাবি করেন। তাঁর বক্তব্য, ধর্ষণকারীকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে শরিয়ায়। সেখানে লিঙ্গচ্ছেদের কোনও উল্লেখ নেই।