চিনা প্রেসি়ডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার তাসখন্দে। ছবি: পিটিআই।
চেষ্টা হয়েছিল একেবারে শীর্ষ স্তরে। তাতেও লাভ হল না। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর (এনএসজি) সোল বৈঠকের প্রথম দিনে ভারতের সদস্যপদ নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলেই রইল। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত আর্জি সত্ত্বেও।
সোলে এনএসজি-র প্লেনারি বৈঠকের সময়েই তাসখন্দে ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’-এর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি এনএসজি-র সদস্যপদ নিয়ে শি চিনফিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন বলে আগেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছিল।
আজ মোদী-চিনফিং বৈঠকের পরে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ জানান, আলোচনার বেশিরভাগটাই জুড়ে ছিল এনএসজি প্রসঙ্গ। ভারতের সদস্যপদের আবেদনকে ‘ন্যায্য ভাবে’ বিচার করতে চিনফিংকে অনুরোধ করেন মোদী। কূটনীতিকরা জানাচ্ছেন, ভারত পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ (এনপিটি) চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী নয় এই যুক্তিতেই বার বার আপত্তি তুলছে চিন। কিন্তু পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধে ভারতের রেকর্ড দেখেই এনএসজি-র সদস্যদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে দিল্লি। এক কূটনীতিকের কথায়, ‘‘ন্যায্য ভাবে বিচার করার কথা বলে চিনা প্রেসিডেন্টকে এই যুক্তিই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’’ বিকাশ স্বরূপের কথায়, ‘‘ভারতের পক্ষে এনএসজি-তে ক্রমশ ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে। চিনকে সেই ঐকমত্যে যোগ দিতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
ভারতের সদস্যপদের বিরুদ্ধে এ দিনও চিনের কাছে জোরদার সওয়াল করে পাকিস্তান। মোদীর সঙ্গে বৈঠকের আগে পাক প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেনের সঙ্গে কথা বলেন চিনফিং। পাক বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, এনএসজি সদস্যপদের জন্য একটি দেশের ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙা হলে তা দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত ভারসাম্য নষ্ট করে দেবে বলে চিনফিংকে জানান হুসেন। চিন তাদের পাশেই আছে বলে পাকিস্তানকে জানান চিনফিং।
এনএসজি-র প্লেনারি বৈঠকের শুরুতে ভারতের সদস্যপদের বিষয়টি তোলে জাপান-সহ কয়েকটি দেশ। তখন স্থির হয় নৈশভোজের পরে এক বিশেষ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। ওই বৈঠকে ভারতকে সমর্থন করে কিছু দেশ। কিন্তু চিন, তুরস্ক, অস্ট্রিয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ার্ল্যান্ড ও ব্রাজিলের মতো দেশ বিরোধিতা করে। ফলে শেষ পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
এই কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে বাতিল হয়েছে ভারত-চিন আর্থিক বৈঠক। ইতিমধ্যেই ওই বৈঠকের জন্য বেজিং পৌঁছে গিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু এ যাত্রা অন্য কিছু কর্মসূচিতে যোগ দিয়েই ফিরবেন তিনি। আমলারা অবশ্য দাবি করছেন, অর্থ বিষয়ক দফতরের সচিব শক্তিকান্ত দাস বেজিংয়ের বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না। সে জন্যই বৈঠকটি বাতিল করা হয়েছে।