বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত। সেই ক্ষোভের আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ল ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের ছ’মাস পূর্তিতে।
গত কাল রাতে রাস্তায় নামেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সংখ্যাটা ৪০ হাজারের বেশি। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, তেল আভিভ ক্রসরোডে (ডেমোক্র্যাসি স্কোয়্যার) উপস্থিত ছিলেন লক্ষাধিক নাগরিক।
অধিকাংশেরই হাতে জাতীয় পতাকা। সরকার বিরোধী স্লোগান উঠল বিক্ষোভ মিছিল থেকে। নেতানিয়াহুর ইস্তফার দাবির পাশাপাশি দেশে অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। গাজ়ায় পণবন্দি ইজ়রায়েলি নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফেরানোর দাবিও জানিয়েছেন। অনেকেরই আশঙ্কা গাজ়ায় যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে, সেখানে পণবন্দি ইজ়রায়েলির মৃত্যুর সংখ্যাও তত বাড়বে।
শুধু রাজধানী নয়, দেশের অন্যান্য শহরেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মানুষের ঢল। কেফার সাভা শহরে মিছিলে পা মেলান বিরোধী নেতা ইয়ায়ির লাপিদ। শাসক শিবিরকে বিদ্রুপ করে লাপিদ বলেন, “ওরা কিছুই শেখেনি। ওরা বদলাবে না।” এর পরেই নেতানিয়াহুকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বিরোধী শিবিরের প্রধান নেতা বলেন, “যত ক্ষণ না ওদের বাড়ি পাঠানো হবে, ওরা দেশকে এগোতে দেবে না।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তেল আভিভের ওই মিছিলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। গ্রেফতার করা হয় পাঁচ বিক্ষোভকারীকে। গাজ়ায় পণবন্দি ইজ়রায়েলি নাগরিকদের পরিজনও তেল আভিভের মিছিলে পা মিলিয়েছেন। তাঁদের অনেকেরই আশঙ্কা, প্রিয়জনকে হয়তো আর ফিরে পাবেন না। আর এ জন্য নেতানিয়াহুকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামাসের আক্রমণের জেরে ১১৭০ জন নিহত হন। সেই সময়েই হামাসের জঙ্গিরা প্রায় ২৫০ জন ইজ়রায়েলিকে পণবন্দি করে। পাল্টা অভিযানে নামে ইজ়রায়েল। এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েলি সেনার আক্রমণে গাজ়ায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৩ হাজার মানুষ। নিহতদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু।
ইজ়রায়েলি সেনা সূত্রে খবর, গাজ়ায় এখনও আটকে রয়েছে ১২৯ জন ইজ়রায়েলি। অন্তত ৩৪ জনের পণবন্দির মৃত্যু হয়েছে।
এ দিকে গাজ়ায় ইজ়রায়েলি সেনার লাগাতার হামলার তীব্র বিরোধ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ। যুদ্ধের জেরে লাফিয়ে বাড়তে থাকা মৃত্যু মানবিকতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “যুদ্ধের জেরে প্রতিদিন নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।” দ্রুত যুদ্ধ থামানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি।