রাইফেলে লক্ষ্যভেদ থেকে কাঁটাতারের বলয়ের মধ্য়ে দিয়ে কার্যত হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যাওয়া। গেরিলা মিলিটারি প্রশিক্ষণের সব ধাপে সমান ভাবে সফল বেলজিয়ামের রাজকন্যা এলিজাবেথ।
১৮ বছরের এই তরুণী দেখিয়ে দিয়েছেন রাজকুমারী মানেই রূপকথা বা স্বপ্নের রাজপুত্র নয়। বরং, রাজকন্যা মানে তাঁর নিজের দেশের একজন নাগরিকও।
বেলজিয়ান আইন অনুযায়ী রাজা ফিলিপ এবং রানি ম্যাথাইল্ডের বড় মেয়ে এলিজাবেথ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী।
রাজকন্যার জন্ম ২০০১-এর ২৫ অক্টোবর। তাঁর জন্মের সময় রাজা ফিলিপ ও রানি ম্যাথাইল্ড ছিলেন ব্র্য়াবান্টের ডিউক ও ডাচেস। ফলে এলিজাবেথের উপাধিও এখন ডাচেস অব ব্র্য়াবান্ট।
ব্রাসেলসের সেন্ট জন বার্কম্যানস কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন এলিজাবেথ।
২০১৩-র ২১ জুলাই তাঁর বাবা অভিষিক্ত হন রাজসিংহাসনে। তার পর থেকে এলিজাবেথও দেশের রাজকন্য়া তথা ডাচেস অব ব্র্যাবান্ট।
ওয়েলস-এর ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজ অব দ্য আটলান্টিক থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করেন এলিজাবেথ। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি অভ্যস্ত হয়েছেন রাজকীয় আদবকায়দায়। ছোট থেকেই বাবা মায়ের সঙ্গে তাঁকে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।
তাঁর নামে নামকরণ করা হয় মেরু গবেষণাগারের। উত্তর মেরুর কুইন মডল্য়ান্ডে বেলজিয়ামের এই মেরু গবেষণাগার কাজ শুরু করে ২০০৯-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে।
১৯৯১ সালে পরিবর্তন আসে বেলজিয়ামের আইনে। নতুন নিয়ম জারি হয়, এ বার থেকে পুত্র-কন্যা নির্বিশেষে রাজার প্রথম সন্তানই সিংহাসনের উত্তরাধিকার হবেন।
সেই নিয়ম অনুসরণ করে জন্মের পর থেকেই এলিজাবেথ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী।
কয়েক মাস আগে বেলজিয়ামের রাজপরিবার জানিয়েছে, ভবিষ্যৎ সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ এ বার সেনা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বেলজিয়ামের বাটজেনবাখের এলসেনবর্ন বেলজিয়ান সেনা ক্যাম্পে চলছে তাঁর প্রশিক্ষণ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে,১৭০ জন অফিসার পদপ্রার্থীর সঙ্গে সমান ভাবে প্রশিক্ষণ চলছে রাজকন্যা এলিজাবেথেরও।
কোথাও তিনি গাড়ির টায়ার দু’হাতে ধরে ছুটছেন। কোথাও আবার রাইফেল হাতে তাঁর পাখির চোখ চাঁদমারির কেন্দ্রবিন্দু।
মিলিটারি অ্য়াকাডেমির তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা রাজকন্য়াকে পেয়ে সম্মানিত। তবে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজকন্যার কোনও পার্থক্য করা হচ্ছে না।
সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকছে নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে ক্যামোফ্ল্যাজ-পাঠও। রাজকন্যা হাতেকলমে শিখছেন কীভাবে বিপক্ষের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে নিতে হয় ছদ্মবেশ।
একমাস ধরে চলবে প্রশিক্ষণ। উত্তীর্ণ হলে রাজকন্য়াকে মিলিটারি অ্যাকাডেমির তরফে দেওয়া হবে ‘ব্লু বেরেট সম্মান’।