ক্ল্যারেন্স হাউস থেকে বেরোচ্ছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। ছবি: রয়টার্স।
রাজা তৃতীয় চার্লসের অসুস্থতার খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লন্ডনে এসে পৌঁছলেন সস্ত্রীক রাজকুমার হ্যারি। ফলে বাকিংহামের অলিন্দে গুঞ্জন, এ বার কি তা হলে রাজপরিবারের সঙ্গে ছোট রাজকুমারের সম্পর্ক জোড়া লাগবে?
গত কাল সন্ধেবেলা বাকিংহাম প্রাসাদের তরফ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল, ক্যানসারে আক্রান্ত রাজা তৃতীয় চার্লস। তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আপাতত তিনি বিশ্রামে থাকবেন। রাজপরিবার সূত্রের খবর, গত কাল তাঁর অসুস্থতার কথা দুই ছেলেকে ফোন করে নিজেই জানিয়েছিলেন চার্লস। আজ সকালে কয়েকটি ব্রিটিশ সংবাদপত্র দাবি করে, আজই ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসবেন হ্যারি। তবে মেগান এখন আসবেন না, তিনি আমেরিকার বাড়িতে দুই সন্তানের সঙ্গে থাকবেন। কিন্তু বিকেলে দেখা যায়, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ়ের বিশেষ বিমান থেকে নামছেন হ্যারি ও মেগান দু’জনেই। সূত্রের খবর, তাঁদের দুই সন্তান, সাড়ে চার বছরে আর্চি ও আড়াই বছরের লিলিবেট ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়িতেই রয়েছে।
চার্লসের কোথায় ক্যানসার হয়েছে বা সেটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা এখনও বাকিংহামের তরফ থেরে জানানো হয়নি। হ্যারির দফতর থেকে জানানো হয়েছে, পূর্বনির্ধারিত সব কাজ বন্ধ রেখেই চলে এসেছেন চার্লস। কবে তিনি আমেরিকা ফিরে যাবেন, তাও ঠিক হয়নি। হ্যারির এ ভাবে তড়িঘড়ি আমেরিকা থেকে চলে আসায় অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন— তা হলে কি রাজা খুবই অসুস্থ। গত সপ্তাহে নরফোকে ছিলেন চার্লস। শনিবার একটি অনুষ্ঠানে অংশও নিয়েছিলেন। তার পরে দু’দিন আর তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। আজ অবশ্য চার্লস ক্যামিলাকে গাড়ি করে তাঁদের লন্ডনের অন্যতম বাসভবন ক্ল্যারেন্স হাউস থেকে বার হতে দেখা যায়। জানা গিয়েছে, কোনও হাসপাতালে আপাতত ভর্তি হননি চার্লস। বহির্বিভাগেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। তবে কোন হাসপাতাল, তাও আপাতত গোপন রাখা হয়েছে।
মেগানের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই হ্যারির সঙ্গে তাঁর বাবা ও দাদার সম্পর্ক খুবই তিক্ত। প্রথমে ওপ্রা উইনফ্রির সাক্ষাৎকার, তার পরে নেটফ্লিক্সে হ্যারি-মেগানকে নিয়ে তথ্যচিত্র সেই তিক্ততা আরও বাড়িয়েছে। শুধু মানসিক নিগ্রহ নয়, উইলিয়ামের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থারও অভিযোগ এনেছিলেন ডিউক অব সাসেক্স হ্যারি। রাজপরিবার সূত্রের খবর, ২০২১ সালে বাবা ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুর সময়ে চার্লস নাকি তাঁর দুই ছেলেকে মিটমাট করে নিতে বলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘আমার জীবনের শেষ কয়েকটা বছরে আমাকে এ ভাবে দুঃখ দিও না।’’ কিন্তু সেই কথায় যে বিশেষ কাজ হয়নি, তা স্পষ্ট হয়ে যায় গত বছর চার্লসের রাজ্যাভিষেকের সময়ে। সেই অনুষ্ঠানে হ্যারি উপস্থিত থাকলেও তাঁর জন্য নির্ধারিত আসনটি ছিল রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে অনেক দূরে। অনুষ্ঠানের পরেই তাড়াহুড়ো করে আমেরিকা ফিরে গিয়েছিলেন হ্যারি।
বাকিংহাম সূত্রে কাল জানা গিয়েছিল, কোনও অনুষ্ঠানে না গেলেও নিজের বাসভবনে একান্ত বৈঠক করবেন চার্লস। তবে আজ জানানো হয়েছে, আপাতত কোনও কাজ করবেন না তিনি। তাঁর রাজকীয় দায়িত্বগুলি পালন করবেন রানি ক্যামিলা ও যুবরাজ উইলিয়াম।