নিহত সুজা খানজাদা।
মন্ত্রীর উপর জঙ্গি হানার ঘটনায় এ বার নাম জড়াল আইএসের। গত কাল পাক পঞ্জাবের অ্যাটক জেলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুজা খানজাদার ঘরের ভিতরে ঢুকে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। রবিবার রাতেই ১৯ জনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করে নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। আজ নিহতের সংখ্যা আরও এক বেড়ে দাঁড়াল ২০।
শাদি খান গ্রামে নিজের আদি বাড়িতে বাসিন্দাদের নিয়ে কাল এক বৈঠকে বসেছিলেন খানজাদা। সেখানেই দর্শনার্থীর ছদ্মবেশে ঢুকে পড়ে এক জঙ্গি। তার দলের আর এক সদস্য তখন অপেক্ষা করছিল পাঁচিলের বাইরে। মন্ত্রীকে হাতের নাগালে পেয়ে বিস্ফোরণে নিজেদের উড়িয়ে দেয় দুই জঙ্গিই। যে ঘরে সভা বসেছিল, ছাদ সমেত ভেঙে পড়ে গোটাটাই। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান বহু মানুষ। এখনও পর্যন্ত আহত অবস্থায় ১৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে। তবে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি উদ্ধারকাজ।
চলছে ধবংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকার্য।
গত কাল লস্কর-ই-জঙ্ঘভি জঙ্গিগোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ তেহরিক-ই-তালিবান ও জামাত-উল-আহরারও এর কৃতিত্ব দাবি করেছে। সরকারের কোনও শীর্ষ কর্তার উপর আক্রমণ হতে পারে বলে ক’দিন আগে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করেছিলেন গোয়েন্দারা। তা ছাড়া, গত ২৯ জুলাই লস্কর-ই-জঙ্ঘভি প্রধান মালিক ইশক নিহত হওয়ার পর থেকেই সুজা খানজাদাকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছিল জঙ্গিরা। পুলিশের সন্দেহ, সব মিলিয়ে জঙ্গি নিশানায় উপরের দিকেই নাম ছিল পঞ্জাবের এই প্রবীণ মন্ত্রীর। হামলার দায় নিয়ে দাবি-পাল্টা দাবির মধ্যে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ দিন আবার জানিয়েছে, তালিবানের সাহায্য নিয়ে সুজা খানজাদার বাড়িতে চড়াও হয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। পুলিশের এক কর্তাও এ কথা স্বীকার করে বলেন, অ্যাটকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের উপস্থিতির জোরালো প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। তবে প্রাথমিক ভাবে অ়জ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের নামে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এ দিকে, বিস্ফোরণের কড়া নিন্দা করে তদন্তে পাকিস্তানকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন দূতাবাসের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, নিরাপদ রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য সরকারের যে চেষ্টা, তাতে এটা বড়সড় ধাক্কা। তবে পাকিস্তান অপরাধীদের ধরার জন্য মার্কিন সাহায্য চাইলে তারা অবশ্যই পাশে থাকবে।
ছবি: এএফপি এবং রয়টার্স।