PM Narendra Modi

মোদীর সফরে কি গ্রিসের বন্দরে নজর আদানির

দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকসের সম্মেলনের পরেই গ্রিসে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চল্লিশ বছর পরে এই প্রথম ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী গ্রিসে গেলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৫১
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

রাহুল গান্ধী সংসদে দাঁড়িয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যে কোনও বিদেশ সফরের পরেই তাঁর বন্ধু শিল্পপতি গৌতম আদানি সে দেশে কোনও না কোনও বরাত পেয়েছেন। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গ্রিস সফরের পরে আদানি গোষ্ঠী গ্রিসের বন্দর অধিগ্রহণ করতে চাইছে বলে খবর প্রকাশ্যে এল।

Advertisement

গ্রিসের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোদীর বৈঠকে ভারতের তরফ থেকে গ্রিসের একাধিক বন্দর অধিগ্রহণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। কারণ আদানি গোষ্ঠী এ বিষয়ে আগ্রহী। প্রাথমিক ভাবে দু’টি বন্দরের দিকে আদানি গোষ্ঠীর নজর রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কেরিয়াকোস মিটসোতাকিসকে বলেছেন, ভারতের পণ্য ইউরোপে যাওয়ার ‘গেটওয়ে’ হয়ে উঠতে পারে গ্রিস।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকসের সম্মেলনের পরেই গ্রিসে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চল্লিশ বছর পরে এই প্রথম ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী গ্রিসে গেলেন। এই বিদেশ সফরের জন্যই মোদী চন্দ্রযানের চাঁদে অবতরণের সময় ভারতে থাকতে পারেননি। শনিবার সকালে গ্রিস থেকে তিনি সরাসরি বেঙ্গালুরুর ইসরোয় পৌঁছে যান। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, “বোধহয় এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী আরও আগে বেঙ্গালুরু পৌঁছতে পারেননি।’’

Advertisement

গ্রিসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উপরে জোর দিয়েছেন। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে আগামী বছরের গোড়ায় দিল্লিতে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সঙ্গে এ দেশের শিল্পমহলের প্রতিনিধিরাও গিয়েছিলেন। গ্রিসের শিল্পমহলকে ভারতের বিশাল বাজারের সুযোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। গ্রিসের বন্দরগুলিকে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে ভারতের পণ্য ইউরোপের বাজারে পৌঁছতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গ্রিসের সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গ্রিস কী ভাবে ভারতের কাছে ইউরোপে পণ্য পরিবহণের ‘ট্রানজ়িট হাব’ হয়ে উঠতে পারে, সে দিকে মোদীর নজর ছিল। আদানি গোষ্ঠীর প্রাথমিক ভাবে দু’টি বন্দরের দিকে নজর রয়েছে। প্রথমটি কাভালা, দ্বিতীয়টি ভলোস। আলেকজান্দ্রোউপলি নামে অন্য একটি বন্দরের দিকেও আদানি গোষ্ঠীর নজর রয়েছে। এই বন্দরগুলি ভারতের হাতে এলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি বা আদানিদের মালিকানাধীন ইজ়রায়েলের হাফিয়া বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য সহজে ইউরোপের বাজারে পৌঁছতে পারবে। আথেন্সের কাছে পাইরাস বন্দর কাজে লাগানো নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছ। কিন্তু সেই বন্দরের নিয়ন্ত্রণ চিনা সংস্থার হাতে।

মোদীর সফরের পরে গ্রিসের বন্দরে আদানি গোষ্ঠীর লগ্নির সম্ভাবনা নিয়ে গ্রিস সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ এ নিয়ে মুখ খোলেননি। এই খবর ভুল বলেও দাবি করেননি। বিরোধী শিবির মনে করছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের হাত ধরে আদানি গোষ্ঠী গ্রিসের বন্দর অধিগ্রহণ করলে বিরোধীদের হাতে নতুন অস্ত্র এসে যাবে। মোদী জমানায় আদানি গোষ্ঠী এ দেশের একাধিক বন্দর, বিমানবন্দর অধিগ্রহণ করেছে। এর আগে মোদীর ইজ়রায়েল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ সফরের পরেই সেই সব দেশে আদানি গোষ্ঠীকে বরাত পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement